ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’, ভারতে রেড এলার্ট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৮ পিএম, ২ জুন ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৮:০৯ পিএম, ২ জুন ২০২০ মঙ্গলবার
মুম্বইয়ের উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে সাইক্লোন ‘নিসর্গ’। ছবি: পিটিআই
আম্পানের আঘাতের ঘা না শুকাতেই এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’। ক্রমশ তার শক্তিও বাড়ছে। আরব সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ইতিমধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সাইক্লোনিক স্টোর্ম) পরিণত হয়েছে। যা বর্তমানে ঘণ্টায় ১২-১৫ কিলোমিটার বেগে ভারতের উত্তর অভিমুখ বরাবর (ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলের দিকে) এগোচ্ছে, প্রেক্ষিতে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে মুম্বাইয়ে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
দেশটির আবহাওয়া ভবন জানিয়েছে, আগামী ছয় ঘণ্টার মধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টোর্ম) পরিণত হবে। সেটি প্রথমে উত্তর অভিমুখে এবং পরে বাঁক নিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অভিমুখ বরাবর এগোবে। বুধবার অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ‘নিসর্গ’ আছড়ে পড়বে উত্তর মহারাষ্ট্রের হরিহরেশ্বর এবং দক্ষিণ গুজরাট উপকূলের দমনের মাঝে। আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের ঘূর্ণনের গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
আজ আবহাওয়া ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে অবস্থান করছে পানজিম থেকে ২৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মুম্বাই থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং সুরাট থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমে।
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের উপকূলীয় এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া ভবনের কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী সবচেয়ে প্রভাবিত হবে মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় জেলাগুলো। তার মধ্যে রয়েছে, সিন্ধুদূর্গ, রত্নাগিরি, ঠাণে, রায়গড়, মুম্বই ও পালঘর।”
পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র ৩১টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিআরএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল এস এন প্রধান বলেন, “প্রত্যকটি দলে ৪৫ জন করে সদস্য রয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, ৯০-১০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণঝড়টি। আমরা সতর্ক রয়েছি। দুই রাজ্যেই আমাদের বাহিনী প্রস্তুত।”
আবহাওয়া ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে কোঙ্কণ ও গোয়ায়। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে কর্নাটকের উপকূলায় এলাকায়, মধ্য মহারাষ্ট্র এবং মারাঠাওয়াড়ায়। ভারী বৃষ্টি হবে মুম্বই, পালঘর, ঠাণে এবং রায়গড় জেলায়। অন্য দিকে, দক্ষিণ গুজরাতে ভালসার, নভসারি, ডাং, দমন, দাদরা, নগর হাভেলি এবং সুরাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া ভবন আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকে সমুদ্র আরও উত্তাল হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের নীচু এলাকাগুলোতে সমুদ্রের পানি ঢুকে যাওয়ার সম্ভবানা রয়েছে। মুম্বাইয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা দেড় মিটার পর্যন্ত হতে পারে। ঠাণে, রায়গড় জেলায় এক মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। মৎস্যজীবীদের ৩ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
এর আগে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান মরার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো আছড়ে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। লন্ডভন্ড করে দিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি গাছপালা। এই অবস্থায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা সামলাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উদ্ধব ঠাকরের সরকার।
বাংলাদেশেও আঘাত হানে আম্পান, যাতে প্রাণহানী ঘটে ১৩ জনের। লন্ডভন্ড হয়ে যায় বিভিন্ন জেলার ঘরবাড়ি ও গাছপালা। তবে এবার নিসর্গের আঘাত হানার সম্ভাবনা অনেকটাই কম বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এনএস/