প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মুখে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৬ এএম, ৩ জুন ২০২০ বুধবার
আম্ফানের ক্ষত না শুকাতেই এসে পড়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। যা বিকেলে ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে। এসময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত। একই সঙ্গে ঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছাসের আশঙ্কাও করেছেন আবহাওয়াবিদরা।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডিজি মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আরব সাগরে জন্ম নিয়েছে নিসর্গ। যা আজ বুধবার বিকেলের পরে মহারাষ্ট্রের আলিবাগ জেলার কাছাকাছি আছড়ে পড়তে পারে। এর ফলে ওই উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। তার সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ১২০ কিলোমিটার। সমুদ্রের ঢেউ উঠতে পারে ছ’ফুট পর্যন্ত। প্রবল বৃষ্টিরও আশঙ্কা আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ইতোমধ্যেই মুম্বাই, রায়গড়, পালগড়, থানে, রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সকাল থেকেই বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বুধবার বেশিরভাগ ফ্লাইট বাতিল করেছে মুম্বাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে দিনে ২৫টি ফ্লাইট ওঠানামা করলেও বুধবার শুধুমাত্র ১২টি প্লেন অবতরণ করবে বিমানবন্দরটিতে।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আছড়ে পড়েছিল অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এতে প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। এবার প্রাণহানি রুখতে ইতোমধ্যেই তৎপর হয়েছে ভারত।
ইতোমধ্যেই সাগর থেকে জেলেদের তীরে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে কোস্ট গার্ড। গুজরাটের ভালসাদ ও নভসারি জেলার ৪৭টি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
২০০৪ সালে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের যে-নামকরণ শুরু হয়, তার প্রথম তালিকার শেষ নাম ছিল থাইল্যান্ডের দেওয়া আম্ফান। দ্বিতীয় তালিকার প্রথম নাম (নিসর্গ) দিয়েছে বাংলাদেশ।
২০০৪ সাল থেকে হিসেব করলে উত্তর ভারতমহাসাগরীয় এলাকায় সৃষ্ট ৬৫তম ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে নিসর্গ।
কার্যত ১৫ দিনের মধ্যে দু’দিকে দুই সাগরে দু’টি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তির জন্য মূলত উষ্ণায়নকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।
পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটেরিয়োলজির বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথু কোল জানান, আম্ফানের উৎপত্তির সময় বঙ্গোপসাগরে পানির তাপমাত্রা যেমন ছিল (৩০-৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস), আরব সাগরেও বর্তমানে তেমনই উষ্ণতা (৩০-৩২ ডিগ্রি) রয়েছে। তার ফলেই নিম্নচাপ থেকে দ্রুত ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে নিসর্গ। যা আজ বুধবার প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে উঠতে পারে।
এসএ/