মাত্র ৩ লাখ টাকায় মিলবে চার্টার্ড প্লেন!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:০১ পিএম, ৪ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস-এর একটি ফ্লাইট।
দেশের বিত্তশালীদের অনেকেই কিনছেন ব্যক্তিগত বিমান, গড়ে তুলছেন এভিয়েশন কোম্পানি। সেই সাথে জরুরী প্রয়োজনে দেশ কিংবা বিদেশে ভ্রমণে কদর বাড়ছে চার্টার্ড ফ্লাইটের। চলমান করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে যারা জনসমাগমকে ভয় পাচ্ছেন বা নির্দিষ্ট গন্তব্য যেতে পারছেন না, তাদের জন্য এবার সুখবর নিয়ে এলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটি দিচ্ছে মাত্র তিন লাখ টাকায় প্লেন ভাড়া করে (চার্টার্ড প্লেন) দেশের অভ্যন্তরীণ রুটের যে কোনো স্থানে যাওয়ার সুযোগ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সরকারি এ এয়ারলাইনস তাদের নতুন এই ডোমেস্টিক চার্টার্ড অফারের বিষয়টি জানিয়েছে।
বিমান জানায়, পারিবারিক ভ্রমণের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে প্লেন ভাড়া দিচ্ছে সংস্থাটি। এজন্য দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে খরচ হবে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা। এই খরচে শুধুমাত্র ৫ ঘণ্টা প্লেনটি ভাড়া পাওয়া যাবে। অতিরিক্ত ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে অন্যান্য শর্তও রয়েছে।
তবে এই অফারের আওতায় কোন মডেলের প্লেন দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে তা উল্লেখ করা না হলেও জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী ড্যাশ-৮ দিয়ে ফ্লাইট চালানো হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই বিমানে ফ্লাইট পরিচালনা করলে সর্বোচ্চ ৩৬ জন যাত্রী বসতে পারবেন।
বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর রুটে ফ্লাইট চলাচল করছে। অর্থাৎ যে কেউ প্লেন ভাড়া নিয়ে এই রুটে আসা যাওয়া করতে পারবেন। চার্টার্ড প্লেন ভাড়া কিংবা বিস্তারিত তথ্যের জন্য এই নম্বর (০১৭৭৭৭১৫৫০৪ এবং ০১৭৭৭৭১৫৫১৩) দুটিতে যোগাযোগ করতে পারবেন।
এর আগে, করোনার কারণে দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর অভ্যন্তরীণ তিন রুটে গত ১ জুন থেকে ফ্লাইট চলাচল চালু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। তবে যাত্রী সঙ্কটের কারণে পরের দিনই (২ জুন) সব ফ্লাইট বাতিল করে তারা। যা অব্যাহত থাকে ৩ জুন বুধবারও। সবমিলিয়ে ২ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মোট ২৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে বিমানের। তাই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি এয়ারলাইন্সটি এমন অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানা গেছে।
এদিকে, একটা সময় এই চার্টার্ড বিমানের বাজার বিদেশ নির্ভর হলেও এখন দেশীয় উদ্যোক্তাদের অর্থায়নে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বিমান কোম্পানি। যারা নিজেদের প্রয়োজন বা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এসব বিমান পরিচালনা করছেন। বর্তমান করোনাকালে এর ব্যবহার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। জানা যায়, দেশের অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী দেশের বাইরে ভ্রমণে জরুরী প্রয়োজনে আবার কেউ কেউ সবসময় চলাচল করেন এসব চাটার্ড ফ্লাইটে।
এক সময় বিশ্বের কেবল অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাই চলাচল করতেন বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে। বর্তমানে এ ফ্লাইটটি কেবল অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য থেমে থাকেনি। সময়ের প্রয়োজনে বাংলাদেশেও এর ব্যবহার বাড়ছে। সর্বশেষ দেশের তিনজন ব্যবসায়ীও তাদের চার্টার্ড ফ্লাইটে চড়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে রাষ্ট্রিয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিমানসহ বেসরকারি কয়েকটি কোম্পানি দেশে ও বিদেশে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর ব্যয় নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর। তবে গড়পড়তা ঘণ্টা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা গুণতে হয়। সে হিসেবে ইউরোপের দেশে পাড়ি দিতে চাইলে খরচ দাঁড়াবে প্রায় কোটি টাকা। আর চার ঘণ্টা ফ্লাইটে লাগবে প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা।
তবে এয়ার এ্যাম্বুলেন্স চার্টার্ড করতে চাইলে খরচ পড়বে ঘণ্টা প্রতি প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নভোএয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার একেএম মাহফুজুল আলম বলেন, এই খরচটা আসে যাত্রার স্থান ও গন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে। এছাড়া আরও আছে ল্যান্ডিং, পার্কিং, নেভিগেশন, গন্তব্যের রাউণ্ড হিলিংয়ের যদি কোন চার্জ থাকে তার ওপর।
এনএস/