ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

করোনাকালে যেসব খাবার এড়িয়ে যাবেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৯ এএম, ৬ জুন ২০২০ শনিবার | আপডেট: ১১:২১ এএম, ৬ জুন ২০২০ শনিবার

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বেড়ে চলছে তাতে সাবধান হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অন্যান্য সাবধানতার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও চাঙ্গা করে তুলতে হবে। তাই যেসব খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে, সেইগুলোকে বর্জন করা খুবই জরুরি।

এরকম খাবারের মধ্যে আছে কোমল পানীয়, প্যাকেটজাত ফলের রস, কফি ও অন্যান্য ক্যাফিনসমৃদ্ধ খাবার, মিষ্টি-চকোলেট, কেক-পেস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-চিকেন উইং তথা ছাঁকা তেলে/ঘিয়ে ভাজা খাবার, অ্যালকোহল ইত্যাদি। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, নিয়মিত এসব খেলে শরীরে যে ক্ষতি হয়, তার হাত ধরেই সংক্রমণের রাস্তা প্রশস্ত হয়। রোগের জটিলতাও বাড়ে।

এবার জেনে নিন বিস্তারিত...

কোমল পানীয় ও প্যাকেটজাত ফলের রস: এসব পানীয়র গায়ে ‘ডায়েট’ লেখা থাকলে অনেকে খুব স্বস্তি বোধ করেন। উপাদানের তালিকায় নানা রকম ভিটামিন-মিনারেলের নাম থাকলে তো কথাই নেই। কিন্তু সত্যিই কি সেসব খেলে উপকার হয়? হরমোন বিশেষজ্ঞদের মতে ‘‘গোটা ফল চিবিয়ে খেলে শরীরে সুগার ঢোকে ধীরে ধীরে, সঙ্গে থাকে ফাইবার। ফলে শরীর সুগারকে খুব ভাল ভাবে সামলে নিতে পারে। নানা উপকারও হয়। কিন্তু প্যাকেটের ফলের রস খেলে একসঙ্গে অনেকটা সুগার
শরীরে চলে আসে বলে তাকে সামলাতে হিমশিম খায় শরীর। বেশির ভাগ সময় তা নিতেও পারে না। 

ফলে যারা নিয়মিত প্যাকেটজাত ফলের রস খান, তাদের ওজন যেমন বাড়ে, তেমনি বাড়ে ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক সিনড্রোমে আসে নানা সমস্যা। প্যাকেটের ফলের রসে বিপদ আরও বেশি। কারণ তাতে মেশানো থাকে কৃত্রিম রং, গন্ধ, সংরক্ষক, যার কোনওটাই শরীরের জন্য ভাল নয়। কোমল পানীয়তে পুষ্টিহীন কিছু ক্যালোরি শরীরে ঢোকে। তার হাত ধরে হাজারো রোগ বাসা বাঁধে শরীরে, ক্ষতি হয় রোগ প্রতিরোধ শক্তির। ফলে এগুলো করোনা সংক্রমণের জটিলতা বাড়িয়ে থাকে।

কফি ও ক্যাফিনসমৃদ্ধ খাদ্য: চিনি বা সুগার-ফ্রি মিশিয়ে এগুলো খেয়ে থাকেন অনেকেই। এ দুটিই ক্ষতিকর। তা ছাড়া অতিরিক্ত কফি বা ক্যাফিনসমৃদ্ধ খাদ্য বা পানীয় খেলে শরীরে কর্টিজোল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তছনছ করে দিতে যার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। বিকেলের পর খেলে রাতের ঘুমের ব্যাঘাত
ঘটে অনেকের। তাতেও ভেঙে পড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা। অতএব বেশি কফি চলবে না, চলবে না কোলা পানীয়ও। চায়ের উপযোগিতা থাকলেও, চিনির কারণে তাও শেষপর্যন্ত ক্ষতিই করে।

মিষ্টি-কেক-পেস্ট্রি: দিনে একটা মিষ্টি না খেলে অনেকের মন ভরে না। চা-কফিতে চিনি খান অনেকেই। কেক-পেস্ট্রি বা চকোলেট-টফি খাওয়া কারও কাছে নেশার মতো। কিন্তু সমস্যা হল, চিনির কোনও গুণ নেই। ময়দা-ঘি-মাখনের সঙ্গে যুক্ত হলে তা আরও বেশি ক্ষতি করে। প্রদাহের প্রবণতা বেড়ে যায়। পাল্লা দিয়ে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেশি মিষ্টি খেলে ওজন বাড়ে। বাড়ে ডায়াবেটিস বা মেটাবলিক সিনড্রোমের আশঙ্কা। এগুলোও কোভিডের জন্য সমান তালে ক্ষতিকর। এগুলোর বদলে খান ফ্রুট স্যালাড, খেজুর। অল্প কিশমিশও খেতে পারেন।

চপ-কাটলেট-ভাজাভুজি: বিকেলে মুড়ির সঙ্গে তেলেভাজা উপকরণ বাদ দিয়ে খান। রেস্তোরাঁ খুলছে বলে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-চিকেন উইং বা ফ্রায়েড চিকেন অর্ডার করে বসবেন না। ঘরেও ভাজাভুজি খাওয়া কমান। কারণ ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর লবণ থাকে। লবণের ধর্ম হল শরীরে পানি ধরে রাখা ও উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা থাকলে তা আরও বাড়িয়ে দেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে এ দুইয়েরই বড় ভূমিকা আছে। এসব খাবারে ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে প্রচুর। নিয়মিত ভাজাপোড়া খেলে ওজন বাড়ে। বাড়তে পারে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের আশঙ্কা। এসব আশঙ্কার মধ্যে কোভিড হানা দিতে পারে।

অ্যালকোহল: একেবারে বাদ দিতে পারলেই ভাল। বাড়াবাড়ি করলেই কোভিডের যত কো-মর্বিডিটি আছে, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, সবের আশঙ্কা বাড়ে অ্যালকোহল থেকে। এর অভ্যাসে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেশি খেলে নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের আশঙ্কা বাড়ে। তাই করোনাকালে এটি বর্জনীয়।

এএইচ/