কয়েকগুণ দাম বৃদ্ধি
বেড়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৩৭ পিএম, ৬ জুন ২০২০ শনিবার | আপডেট: ০১:৫০ পিএম, ৬ জুন ২০২০ শনিবার
দেশে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় দরকারি সামগ্রী যেমন অক্সি-মিটার, পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, ফেস-শিল্ড এমনকী অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে কোভিড-১৯ না হলেও অনেকে অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার কিনে বাড়িতে রেখে দিচ্ছেন। ফলে হঠাৎ করে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পরামর্শ ছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালেও অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, বিক্রির পাশাপাশি স্বল্প সময়ের জন্য ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে সিলিন্ডার।
প্রচুর চাহিদার কারণে হোম সার্ভিস হিসেবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ডেলিভারি করছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। রাজধানীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার হোম ডেলিভারি দেওয়ার জন্য গত দুই মাসে এক ডজনেরও বেশি অনলাইন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এবং ফেসবুক পেজ চালু হয়েছে। এগুলোতে সিলিন্ডারের পরিমাণ, দাম এবং জরুরি নম্বর দেওয়া আছে।
এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ, এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে তিনগুণ দামেও বিক্রি করছে একেকটি সিলিন্ডার। শুধু সিলিন্ডার নয়, এর পাশাপাশি পোর্টেবল অক্সিজেন ক্যান, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর এবং শরীরে অক্সিজেন লেভেল পরিমাপের জন্য ‘পালস অক্সিমিটার’ও বিক্রি হচ্ছে দেদার।
অনলাইন ব্যবসায়িরা জানান, দুই মাসে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা এত বেশি বেড়েছে যে, দাম প্রতিদিন বাড়ছে। এক হাজার ৫০০ লিটার পরিমাণের সিলিন্ডারের দাম সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ছিল, সেটা এখন ২৬ হাজার টাকা। দাম আরও বাড়তে পারে।
অনলাইনে দেখা যায়, সিলিন্ডারের পাশাপাশি ১২ লিটারের পোর্টেবল অক্সিজেন বারও বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রায় সব অনলাইনেই সিলিন্ডার ‘আউট অব স্টক’ দেখা যায়।
সংশ্নিষ্টরা জানান, কয়েক দফায় আমদানি করেও চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। এখন একটিও স্টকে নেই। অক্সিজেনের পরিমাপের ফলোমিটারের দামও আগের চেয়ে পাঁচ-ছয় গুণের বেশি বেড়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণ দু’ভাবে অক্সিজেন দেওয়া হয়। একটি মাস্কের সাহায্যে। অন্যটি ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে। দুটি পদ্ধতিতেই চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। কারণ দেহের অক্সিজেন লেভেল পরিমাপের পরই প্রতি মিনিটে কতটুকু অক্সিজেন প্রবাহ প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করা হয়।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বা স্যাচুরেশন ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে গেলে প্রথমে অল্প মাত্রায় অক্সিজেন দিতে হয়। এতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অক্সিজেনের মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়।
চিকিৎসকরা আরও জানান, অক্সিজেন বেশি মাত্রায় নিলে ক্ষতির ঝুঁকি আছে। তবে সেটা খুব বড় ঝুঁকি নয়। কিন্তু কখনও কখনও ছোট ঝুঁকি থেকেই বড় সংকটের সৃষ্টি হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন অংশে বিরূপ প্রভাব দেখা দিতে পারে। এ জন্য অক্সিজেন নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করেই তা দেওয়া উচিত।
তারা জানান, বাসায় সিলিন্ডার স্টক করা হলে অগ্নিকাণ্ডের একটা ঝুঁকি থাকে। কারণ সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে অক্সিজেন ভরে রাখা হয়। ফলে একটি বিস্ম্ফোরণ হতে পারে।
এসএ/