হিলি স্থলবন্দরে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি,করোনার শঙ্কা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ৭ জুন ২০২০ রবিবার
করোনাভাইরাসের কারণে দু'মাসের বেশি সময় ধরে স্থলপথে আমদানি বন্ধ থাকায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে পেঁয়াজ। আমদানিকৃত এসব পেঁয়াজ হিলি রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে খালাস ও ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে এ কাজে কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এমনকি মাক্স ছাড়ায় শ্রমিকরা কাজ করছেন। এতে করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। সেই সাথে সড়কগুলোতে যত্রতত্র ট্রাকগুলোকে দাড় করিয়ে থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা।
রবিবার সরেজমিন হিলি রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ নিয়ে আসা ভারতীয় মালবাহী ট্রেনের বগি থেকে দেশীয় ট্রাকে পেঁয়াজ লোড আনলোডের কাজ করছেন কয়েকশত শ্রমিক। একই সাথে এসব পেঁয়াজ কেনার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকার ও ট্রাকের চালক ও সহকারী মিলিয়ে ব্যাপক জনসমাগমের সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু তাদের কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধির শর্তাবলী ও সামাজিক দুরত্ব, অনেকের মুখেই নেই মাক্স, কারো থাকলেও সেটি তারা গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী নাসিমা বেগম ও খলিল হোসেন জানান, গতকয়েকদিন ধরে হিলি স্টেশনে আমদানি করা পেঁয়াজ খালাস করা হচ্ছে। সেই পেঁয়াজ নেওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর পরিমান ট্রাক আসছে। যাতে অনেক চালক ও সহকারী থাকছে, সেই সাথে অনেক শ্রমিক লোড আনলোডের কাজ করছে সব মিলিয়ে অনেক মানুষের সমাগম হচ্ছে এই এলাকায়। কিন্তু কেউ কোন ধরনের সামাজিক দুরত্ব বা মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এতে করে আমরা হিলিবাসী করোনা থেকে অনেকটা নিরাপদ থাকলেও বর্তমানে ঝুকির মধ্যে পড়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
একই সাথে এসব পেঁয়াজ বহনের জন্য ট্রাকগুলোকে দীর্ঘক্ষণ ধরে ছোটসড়কের উপর দাড় করিয়ে রাখছে এতে করে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি অপর এককটি ট্রাক ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কের পার্শ্বের ড্রেনগুলোর উপর দিয়ে উঠে দিচ্ছে। এতে করে অনেক ড্রেনগুলো ভেঙ্গে পড়ছে। সেই সাথে অভারলোডিং এর কারণে সড়কগুলোর বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র যানজটের কারনে চলাফেরা করতে খুবি অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এমনকি সড়কে এতটাই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে যে কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে এম্বুলেন্স বা অন্যকিছু নিয়ে যাওয়ার সে অবস্থা থাকছেনা।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, আসলে যেসব শ্রমিক পণ্য লোড আনলোডের কাজ করছেন, প্রচন্ড গরমের মধ্যে তাদের মুখে মাস্ক ব্যবহার করা সম্ভব নয়। সেকারনেই তারা অনেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করেননা, তবে আমরা যারা আছি সকলেই মাস্কসহ অন্যান্য নিয়ম কানুন মেনে চলছি।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.তৌহিদ আল হাসান বলেন, করোনা সংক্রামনের দিক থেকে হিলি অনেকটাই ভালো অবস্থানে আছে, এখানে আক্রান্তের হার তেমন নেই। তবে রেলপথে পেঁয়াজ আমদানি ও আনলোডকে ঘিরে ব্যাপক মানুষের সমাগম ও মুখে মাস্ক না ব্যবহার করার ফলে কারো মধ্যে যদি করোনা ভাইরাস থাকে তাহলে সেটি অনেকের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অবশ্যই জনসমাগম ও মুখে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, পণ্য আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে বন্দরের আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সকল কতৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে জানানো হয়েছে। সেই নির্দেশনা সবাইকে মেনে চলতে হবে, অবশ্যই সকলকেই মুখে মাক্স পড়তে হবে। কেউ যদি এমনটি না করেন তাহলে সরেজমিন পরিদর্শন পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কেআই/