রাজধানীর যে ১০ এলাকা রেড জোন!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৩৯ এএম, ৮ জুন ২০২০ সোমবার
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দেশে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংক্রমণের হার বিবেচনায় নিয়ে প্রত্যেকটি এলাকাকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন- এই তিন জোনে ভাগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন জোনে বিভক্ত ওইসব এলাকায় কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে একটি রূপরেখা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের ওই রূপরেখাটি গতকাল রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরই অঞ্চলভিত্তিক এই রূপরেখা বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষ করে রেড জোনে প্রাথমিকভাবে ২১ দিন লকডাউন করার চিন্তাভাবনা চলছে। সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরেই এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর আগে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে একাধিক সভা হয়েছে। সেই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন্য পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। এর পরই এটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, প্রস্তাবনায় রাজধানীর ১০টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই এলাকাগুলো হলো- গুলশান, কলাবাগান, গেন্ডারিয়া, পল্টন, সূত্রাপুর, রমনা, মতিঝিল, তেজগাঁও, শাহজাহানপুর ও হাজারীবাগ।
আগামীকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার রাজাবাজার ও ওয়ারীতে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হতে পারে। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, দিনক্ষণ সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে চলতি সপ্তাহ থেকে এটি কার্যকর করা হবে। প্রথমে সর্বোচ্চ সংক্রমিত রাজধানী ঢাকা থেকে এলাকাভিত্তিক রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে কার্যক্রম শুরু হবে। এর পর পর্যায়ক্রমে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের সব জেলা-উপজেলা এ কার্যক্রমের আওতায় আসবে। আজ সোমবারের মধ্যে এটি কার্যকর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। এর পরই এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এছাড়া সারাদেশকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করার প্রক্রিয়া নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে গত কয়েক দিন দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জোনভিত্তিক কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, প্রতি লাখে সংক্রমণের হার কত হলে তা কোন জোনে ভাগ করা হবে, তা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে পৃথক সংক্রমণের হার বিবেচনায় নিয়ে জোনগুলো ভাগ করা হয়। সে অনুযায়ী, ঢাকায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৩০ জন আক্রান্ত হলে সেটিকে 'রেড' জোন ধরা হবে। ঢাকায় রেড জোন ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রতি লাখে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০-এর পরিবর্তে ৪০ করার প্রস্তাব করেছেন বৈঠকে উপস্থিত বিশেষজ্ঞদের কয়েকজন। এ কারণে সারসংক্ষেপে ওই দুটি প্রস্তাবনার কথা উল্লেখ আছে। ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লাখে ৩ থেকে ২৯ হলে সেটিকে 'ইয়েলো' জোন ধরা হবে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লাখে শূন্য থেকে ২ হলে তা 'গ্রিন' জোন হিসেবে বিবেচিত হবে।
ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লাখে ১০ জন হলে তা 'রেড' জোন বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়া আক্রান্ত প্রতি লাখে ৩ থেকে ৯ জন হলে তা 'ইয়েলো' জোন এবং আক্রান্তের সংখ্যা শূন্য থেকে ২ জন হলে তা 'গ্রিন' জোন বলে বিবেচিত হবে।
এমবি//