বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে শাওনের সফলতা
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:৪২ পিএম, ১৫ জুন ২০২০ সোমবার
সাগর বা নদী, পুকুর বা খাল-বিলে নয়; আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি করা ট্যাংকিতে মাছ চাষ হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। নতুন এ পদ্ধতির নাম বায়োফ্লক। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন জেলার হাতিকাটা গ্রামের শিক্ষিত তরুণ শাওন জোয়ার্দ্দার।
এতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কম খরচে অধিক মাছের উৎপাদন করা সম্ভব। ফলে দেশের পুষ্টি চাহিদার যোগান বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।
জেলার তরুণ উদ্যোক্তা শাওনের হাত ধরে এ পদ্ধতির মাছ চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। অল্প জায়গায় বেশি পরিমাণে মূল্যবান মাছ চাষের ফলে অধিক লাভের আশা করছেন শাওন। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসছে এ চাষে।
শাওন জোয়ার্দ্দার জানান, ‘ঢাকায় বিবিএ পড়ার সময় ইউটিউবে প্রথম বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ভিডিও দেখে তার আগ্রহ জন্মায় । এরপর লেখাপড়ার পাশাপাশি বায়োফ্লক সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। গ্রহণ করেন বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ। তার নিজ গ্রামে শুরু করেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ।’
তিনি জানান, ‘দেশি প্রজাতির শিং, কৈ, মাগুর, ট্যাংরা ও পাবদাসহ বেশকিছু মূল্যবান মাছের চাষ হচ্ছে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে। এতে বিলুপ্ত প্রায় দেশিয় মাছের উৎপাদন আবারও বাড়তে শুরু করেছে। বাজারেও তুলনামূলক কম মূল্যেই পাওয়া যাচ্ছে এসব মাছ।’
শাওনের বাবা মহসিন জোয়ার্দ্দার জানান, ‘১ হাজার কেজি মাছ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ট্যাংকি প্রস্তুত করতে ব্যয় হয় ৩৫/৪০ হাজার টাকা। মাছের পোনাসহ আনুসাঙ্গিক খরচ হয় আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু একটি ট্যাংকি থেকে চার মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব। পরবর্তীতে যেহেতু ট্যাংকির খরচ লাগে না সে হিসেবে পরবর্তীতে লাভের পরিমাণ আরও বাড়ে।’
শাওনের সহযোগী ফরহাদ জোয়ার্দ্দার জানান,‘শাওনের দেখাদেখি এলাকার অনেক তরুণ বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই জেলার কয়েক তরুণ শাওনের সহযোগিতায় মাছ চাষ শুরু করেছেন।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন জানান,‘স্বল্প সময়ে, অল্প জায়গায় অধিক ঘনত্বে বায়োফ্লক পদ্ধতির মাছ চাষ করা যায়। এ পদ্ধতির মাছ চাষ দেশের পুষ্টি চাহিদায় অসামান্য অবদান রাখবে ও বেকার সমস্যা দূর হবে। বায়োফ্লক পদ্ধতির মাছ চাষে আগ্রহীদের সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
এআই//