শরণখোলায় একমাস ধরে পানিবন্দী তিনশতাধিক পরিবার
বাগেরহাট প্রতিনিধি.
প্রকাশিত : ০৬:০২ পিএম, ১৬ জুন ২০২০ মঙ্গলবার
একমাস ধরে পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে বাগেরহাটের শরণখোলার ৩শতাধিক পরিবার। ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বৃষ্টির পানিতে শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার ও আশপাশের বসাবসকারী পরিবারগুলো একমাস ধরে পানিবন্দী রয়েছেন। পানি বদ্ধ থাকার ফলে রান্নাও বন্ধ রয়েছে অনেক পরিবারের। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে পানিবন্দী মানুষগুলো। ঘর থেকে বের হলেই দূষিত পানি-কাঁদা। জরুরী প্রয়োজনে দূষিত পানি ও কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হয় বাইরে।
ঘুর্নিঝড় আম্পান ও আম্পান পরবর্তী বৃষ্টির পানিতে ওই এলাকা তলিয়ে যায়।পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্মানাধীন রায়েন্দা বাজার রক্ষাবাধের আটটি ড্রেন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ওই পানি আর নামতে পারেনি। যার ফলে প্রায় একমাস ধরে পানিবন্দি রয়েছে উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার ও আশপাশের বসাবসকারী পরিবারগুলো।এর ফলে নানাধরণের শারিরীক, মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পানিবন্দি পরিবারগুলো।
ওই এলাকার শিক্ষক ওমর ফারুক, কাঠ ব্যবসায়ী খলিল খাঁন, শহিদুল খাঁন, ফারুক খাঁন, রহিমন বেগম বলেন, আমরা রায়েন্দা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে সরকারী খাদ্যগুদাম পর্যন্ত প্রায় তিনশত পরিবার পানি বন্ধী অবস্থায় আছি। নারী ও শিশুরা গৃহবন্ধী অবস্থায় আছে। কাচা বাতরুম ডুবে যাওয়ায় মানুষের ময়লা ও দূর্গন্ধ সর্বোত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় থাকা এখন দায় হয়ে পড়েছে। জীবিকার তাগিদে ময়লা পানি মাড়িয়ে বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে আমাদেরকে। আমরা রান্না-বান্না, গোসল পর্যন্ত করতে পারছি না। ময়লা পানি শরীরে লেগে আমাদের অনেকের শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। রায়েন্দা খালের পাশ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মানাধীন ভেড়িবাঁধ থেকে পানি নিষ্কাশনের পথগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেভাবে হোক এ অবস্থার নিরসন চাই আমরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল আহম্মেদ রুমি জানান, ভেড়িবাঁধের কাজের কারনে পাঁচ ছয়টি ড্রেনের মূখ বন্ধ হয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত ড্রেন নির্মান না করলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, একটি পয়েন্ট থেকে পাইপ দিয়ে পানি নামানো ব্যবস্থা করা হয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। আটকে থাকা পানি বের করার জন্য আরো বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূলত ভেড়িবাঁধের সাথে ১০টি ড্রেন করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা এখনো নির্মান করছে না। এগুলো নির্মান হয়ে গেলে আর এ সমস্যা থাকবে না।
উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি)-এর কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সি.এইচ.ডাব্লিউ নামের চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্ষা মৌসুমে কাজ করে না। তাই অধিকাংশ কর্মী ছুটিতে নিজ দেশে চলে গেছেন। আরা যারা আছেন তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে বের হচ্ছেন না। তারপরেও তাদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পানিবন্দি থাকার বিষয়টি স্বীকার করে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, পানিবন্দি এলাকা আমি ষড়জমিনে পরিদর্শন করেছি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেড়িবাঁধ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত পানি নিস্কাশন করা হবে জানিয়েছেন তারা।
আরকে//