ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

চীন-ভারত সামরিক শক্তিতে কে কত এগিয়ে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ১৭ জুন ২০২০ বুধবার

লাদাখের গালওয়ান ভ্যালিতে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের ডামাঢোল বাজতে শুরু করেছে। সোমবার রাতে দু‌'পক্ষেরই বেশ কয়েকজন সেনা হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। ওই রাতের ঘটনায় অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। এরপরই দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা হঠাৎ বহুগুণ বেড়ে গেছে। যদিও চীন-ভারতের এই উত্তেজনা শুরু ১৯৬২ সাল থেকে।

ওই যুদ্ধের পর বিগত দশকগুলোতে এশিয়ার এই দুটি দেশ বিপুল সমরাস্ত্র সম্ভার গড়ে তুলেছে। আর এর সঙ্গে সঙ্গে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে বৈরিতাও বেড়েছে বহুগুণ। দুটি দেশেরই বিপুল অস্ত্রসম্ভার রয়েছে এবং এসব অস্ত্রশস্ত্র বেশ আধুনিক। 

গত ২০ বছর ধরে দুটি দেশ শুধু নিজেরাই সমরাস্ত্র তৈরি করেনি, একই সঙ্গে অস্ত্র আমদানিও করেছে। বিশেষ করে ভারত পরপর পাঁচ বছর বিশ্বের সবচাইতে বেশি অস্ত্র আমদানিকারক দেশের স্থান দখল করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইসরাইল থেকে তারা অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র এনেছে। তারা নিজেরাও বিদেশি প্রযুক্তি এনে নিজেরা অস্ত্র তৈরি করেছে। একইভাবে চীন রাশিয়া থেকে কিছু অস্ত্র কিনেছে, কিন্তু বেশিরভাগ অস্ত্র তারা এখন নিজেরা উৎপাদন করে।

এবার একনজরে জেনে নেয়া যাক সামরিক শক্তিতে চীন আর ভারতের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে...

পিআরডাব্লিউ র‌্যাঙ্কিং

সামরিক শক্তির এই র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে আছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার ঠিক পরে, অর্থাৎ তিন নম্বরে আছে চীন, আর ভারত আছে চার নম্বরে।

সক্রিয় সেনাসদস্য

বিশ্বের ১৩৮টি দেশের মধ্যে পিআরডাব্লিউ ইনডেক্সে তৃতীয় স্থানে থাকা চীনের মোট ২১ লাখ ২৩ হাজার সেনাসদস্য রয়েছে, ভারতের রয়েছে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার সেনাসদস্য। তবে রিজার্ভ সৈন্যর সংখ্যায় ভারত এগিয়ে। চীনের পাঁচ লাখ ১০ হাজারের বিপরীতে তাদের রয়েছে ২১ লাখ রিজার্ভ সৈন্য।

প্রতিরক্ষা বাজেট

প্রতিরক্ষা খাতে চীনের বাজেট ২৩৭০ কোটি ডলার এবং ভারতের ৬১০ কোটি ডলার।

এয়ারক্রাফট

এখানেও চীন এগিয়ে। চীনের ৩২১০টির বিপরীতে ভারতের রয়েছে ২১২৩টি এয়ারক্রাফট।

যুদ্ধজাহাজ

চীনের রয়েছে ৭৭৭টি যুদ্ধজাহাজ, আর ভারতের রয়েছে ২৮৫টি।

যুদ্ধবিমান

চীনের যুদ্ধবিমান ভারতের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। চীনের ১২৩২টি, আর ভারতের ৫৩৮টি৷

হেলিকপ্টার

চীনের আছে ৯১১টি হেলিকপ্টার, আর ভারতের ৭২২টি৷

ট্যাঙ্ক

ভারতের ট্যাঙ্ক চীনের চেয়ে অনেক বেশি। চীনের আছে ৩৫০০টি ট্যাঙ্ক, আর ভারতের ৪২৯২টি।

সাঁজোয়া যান

চীনের সাঁজোয়া যানবাহনের সংখ্যা ৩৩ হাজার, অন্যদিকে ভারতের ৮ হাজার ৬৮৬।

স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি

এই ক্যাটাগরিতে দু’দেশের তুলনাই হয় না। চীনের আছে ৩৮০০, ভারতের মাত্র ২৩৫৷

ফিল্ড আর্টিলারি

এখানে ভারত কিছুটা এগিয়ে। চীনের ৩৮০০টির বিপরীতে ভারতের রয়েছে ৪০৬০টি ফিল্ড আর্টিলারি।

রকেট প্রজেক্টর

চীনের আছে ২৬৫০টি রকেট প্রজেক্টর, আর ভারতের ২৬৬টি। সুতরাং এখানে চীন প্রায় দশগুণ এগিয়ে।

সাবমেরিন

সাবমেরিনের সংখ্যার দিক থেকেও ভারত অনেক পিছিয়ে। চীনের ৭৪টির বিপরীতে ভারতের আছে ১৬টি সাবমেরিন।

বিমানবাহী জাহাজ

চীনের আছে ২টি, ভারতের ১টি।

ডেস্ট্রয়ার

চীনের আছে ৩৬টি, অন্যদিকে ভারতের আছে ১০টি ডেস্ট্রয়ার।

ফ্রিগেট

চীনের ৫২টি ফ্রিগট, আর এর ঠিক চার ভাগের এক ভাগ রয়েছে ভারতের, অর্থাৎ ১৩টি।

রণতরি

রণতরি চীনের ৫০টি, ভারতের ১৯টি।

উপকূলীয় টহল

চীনের ২২০, ভারতের ১৩৯।

বিমানবন্দর

চীনের আছে মোট ৫০৭টি বিমানবন্দর, আর ভারতের রয়েছে ৩৪৭টি।

নৌবন্দর এবং টার্মিনাল

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন প্রায় সব জায়গার মতো এখানেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে। চীনের ২২টির বিপরীতে ভারতের রয়েছে মোট ১৩টি বন্দর ও টার্মিনাল।

এএইচ/