চুয়াডাঙ্গায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১১ পিএম, ১৮ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:১৬ পিএম, ১৮ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার
চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই হু-হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ রোগী। এ জেলায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে ১৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ জন। এদিকে আশঙ্কাজনক হারে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও এ জেলায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
করোনার সংক্রমণ রোধে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভার দু’টি ওয়ার্ডকে রেড জোন করে ‘লকডাউন’করা হয়েছে। এই রেড জোনে কিছুটা নিয়ম মানা হলেও শহরে স্বাস্থ্যবিধি মানার নামগন্ধ নেই। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে চোখে পড়ছে তীব্র যানজট। রাস্তায় অটো, রিক্সা-ভ্যান, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট ও গণপরিবহনের উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের মতোই।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) শহরের শহীদ হাসান চত্বরের চৌরাস্তার চিত্র দেখলে কারও মনেই হবে না দেশে মহামারি চলছে বা সরকার খুব প্রয়োজন না হলে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে মানুষ ভীষণ উদাসীন। প্রশাসন নানা সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও বিষয়টি ঠিকভাবে আমলে নিচ্ছেন না অনেকেই। বাজার, রাস্তাঘাট, বিপণী বিতানসহ কোনো স্থানেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
সার্বিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা বলছেন, মানুষের এ অবহলোর কারণে করোনা ভাইরাস চুয়াডাঙ্গায় আরো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
সরকারি হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬৪ হলেও পরবর্তীতে বাড়তে পারে কয়েক হাজার। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করে যাদের করোনা শনাক্ত করা যাচ্ছে তাদেরই আমরা করোনা রোগী বলছি। কিন্তু জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও কয়েক হাজার লোক রয়েছে, পিসিআর ল্যাবে যাদের নমুনা পরীক্ষা করা যায়নি। আমরা ধারণা করছি, তাদের মধ্যেও করোনা রোগী রয়েছে। এই দুর্যোগকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষের উচিত ঘরে থাকা।
জেলার সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান জানান, করোনার উপসর্গ শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বর্তমানে ২৮ জন ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে রেড জোন ওয়ার্ডে ২৫ ও হলুদ জোন ওয়ার্ডে ৩ জন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, জেলায় শনাক্ত ব্যক্তিদের সিংহভাগই আক্রান্তদের সংস্পর্শে গিয়ে সংক্রমিত হয়েছেন। তাই সবার উচিত হবে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, চুয়াডাঙ্গায় এ পর্যন্ত ১৮৭৫ টি নুমনা পরীক্ষার করা করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে ১৬১৭টি। এর মধ্যে ১৬৪ টি নমুনা পজিটিভ এসেছে।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, মানুষ যাতে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করে সে ব্যাপারে সতর্কভাবে কাজ করছে জেলা পুলিশ বিভাগ। তবে বিপজ্জনক এই পরিস্থিতিতে মানুষজনের স্বেচ্ছায় আইন মানা উচিত।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম জানান, করোনার প্রাদুর্ভাবে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌরসভার ৫ ও ৭নং ওয়ার্ড রেড জোন হিসেবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। দু’টি ওয়ার্ডে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।
কেআই/