ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন নিপিড়নের অভিযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ২১ জুন ২০২০ রবিবার

মার্কিন ব্লগার সিনথিয়া রিচি, ছবি- সংগৃহীত।

মার্কিন ব্লগার সিনথিয়া রিচি, ছবি- সংগৃহীত।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন ব্লগার সিনথিয়া রিচি। রিচির অভিযোগ, ২০১১ সালে রেহমান মালিক তাকে ধর্ষণ করেন। খবর ডয়চে ভেলে’র। 

উল্লেখ্য, গিলানি ও মালিক দুজনেই প্রয়াত নেতা বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সদস্য। ২০০৭ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে বোমা হামলায় নিহত হন বেনজির। 

জুনের শুরুতে রিচির এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর পাকিস্তানে হইচই পড়ে যায়। যদিও উভয় নেতা রিচির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ নিয়ে রিচির বিরুদ্ধে আদালতে এফআইআর হয়েছে। রিচি বলেন, ‘তিনি আদালতে নিজের অভিযোগ প্রমাণ করতে প্রস্তুত আছেন।’ 

মার্কিন ফ্রিল্যান্স পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক রিচি ২০১০ সালে প্রথম পাকিস্তানে যান। তারপর থেকে তিনি বেশির ভাগ সময় সে দেশেই বসবাস করছেন। এতদিন পর যৌন নিপীড়ন নিয়ে মুখ খোলার কারণ জানতে চাইলে রিচি বলেন, ‘বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে আমি ফেসবুকে আমার জীবনের গল্প  বলা শুরু করি।’ 

এক মাস আগে বেনজির ভুট্টোকে নিয়ে টুইটারে আক্রমণাত্মক পোস্ট দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন রিচি। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি পিপিপি সদস্যদের হাতে অসম্মানিত হওয়ার কথাও বলেন।

রিচি বলেন, ‘ফেসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আমার সৎ ভাই (তার বাবার প্রথম পক্ষের সন্তান) সেজে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পিপিপি ও পশতুন তাহাফুজ মুভমেন্ট বা পিটিএম-এর সঙ্গে ওই ব্যক্তির যোগাযোগ আছে এবং সেখান থেকে আমার ও আমার পরিবারের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে তা অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। আমাকে হেনস্তা করা এক কথা। কিন্তু আমার পরিবারকে হেনস্তা আমি মেন নেব না।’

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টি এবং সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাদের ইন্ধনে রিচি পিপিপি নেতাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এ লেখিকা বলেন, ‘তারা তো এ কথা বলবেই, এটাই তো স্বাভাবিক। পিপিপি অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে, নিজেদের কর্মফলে দল শেষ হতে বসেছে। তারা এখন যে-কোনো বাহানায় আলোচনায় থাকতে চায়। অতীতে তারা ‘গণতন্ত্রপন্থি ও নারীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছে’ এমন ভাব দেখাতো। তাদের সেই মুখোশ খুলে গেছে বা যাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে- পিপিপি নেতারা জনগণের জন্য কিছুই করেনি। দলের বেশির ভাগ বৃদ্ধ নেতাদের এখন অবসরে যাওয়া উচিত এবং তাদের জায়গায় নতুনদের আনা উচিত, যারা সত্যি সত্যি পাকিস্তানের উন্নতি চায়।’

যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে বেছে নেওয়া কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার যত অনুসারী এখন আছেন সেটা ২০১১ সালে ছিল না। আমার মনে হয়েছে নিজের জীবনের গল্প বলার জন্য এটাই সবচেয়ে সেরা জায়গা।’ 

আদালতে অভিযোগ প্রমাণের বিষয়ে রিচি বলেন, ‘আশা করি ভাগ্য আমার সহায় হবে। তবে যদি আমি এখানে বিচার না পাই, তবে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যাব। কারণ সেখানেও পিপিপি কর্মীরা অনলাইন ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে আমাকে হেনস্তা করছে। প্রয়োজনে আমি অনলাইনে প্রচার চালিয়ে যাব।’

এমএস/এনএস