ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় ছয় ব্যাংকারের করোনা শনাক্ত 

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:৪০ পিএম, ২৫ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার

চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনই ব্যাংকার। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২০৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১১০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। 

বুধবার (২৪ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

জানা গেছে,, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে প্রাপ্ত ৩৩ জনের নমুনায় তাদরে করোনা ধরা পড়ে। আক্রান্ত সাতজনের মধ্যে জীবননগরের ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা। অপরজন একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের এক নারী। নতুন আক্রান্তরা হোম ও  প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দু’দিনের ব্যবধানে জীবননগর ইসলামী ব্যাংকের ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৩ ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের সোলায়মান নামের এক কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় পরীক্ষার পর প্রায় প্রতিদিনই ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এতে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসন আক্রান্ত ব্যক্তিদের বসবাস এলাকা রেডজোন হিাবে ঘোষণার মধ্যদিয়ে লকডাউন করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জুলিয়েট পারউইন জানান, ‘ইসলামী ব্যাংকের নতুন করে যে ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের কারও উপসর্গ ছিল না। এর বাইরে একজন সাংবাদিকের স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার করোনার উপসর্গ ছিল।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে ইসলামী ব্যাংক জীবননগর শাখার একজন কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তখন পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারীও করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। যাদের মধ্যে চারজন বর্তমানে হোম আইসোলেশনে এবং একজন সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মুনিম লিংকন জানান, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে মহল্লার পাঁচটি প্রবেশমুখের সব কটিতে বাঁশের প্রতিবন্ধকতা বসানো হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মহল্লার মানুষদের বাইরে বের হওয়া ও বাইরের লোকজনকে মহল্লায় প্রবেশে ঠেকানো এবং ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে নিত্য  প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভার আরও তিনটি ওয়ার্ড লকডাউন করা হয়েছে। বুধবার থেকে এ লকডাউন কার্যকর হচ্ছে। এর আগে ১৬ জুন দর্শনা পৌরসভার  ৫নং ও ৭নং ওয়ার্ডকে রেড জোন  হিসেবে চিহ্নিত করা করে জেলা প্রশাসন। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও আলমডাঙ্গা উপজেলার হাড়োকান্দি গ্রামকে লডাউন করা হয়েছে। 
 
জেলায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত সদর উপজেলায়। যেখানে ৬৫ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ৪৩ জনই সুস্থ হয়েছেন। প্রাণ গেছে একজনের। 

আলমডাঙ্গায় আক্রান্ত ৫৩ জনের মধ্যে সুস্থ ২৮ জন, দামুড়হুদায় ৫৯ জন আক্রান্তে ইতিমধ্যেই ৩২ জন বেঁচে ফিরেছেন ও মারা গেছে ১ জন।  জীবননগর উপজেলায় করোনার শিকার ২৬ জন, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ০৭জন। গত ১৯ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন আলমডাঙ্গা উপজেলার ইতালিফেরত এক যুবক।

সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় ঘর থেকে বের না হওয়াই সব থেকে উত্তম। এরপরও জরুরি প্রয়োজনে বের হলে অবশ্যই হাতে গ্লাভস ও মুখে মাস্ক পরে বের হতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’ 

এআই//