করোনায় ঋণের চাপে আফ্রিকা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৫৯ পিএম, ২৬ জুন ২০২০ শুক্রবার
করোনার প্রাদুর্ভাবে অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে। বাড়ছে ঋণের বোঝা। আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য সামনে এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটই ঘনিয়ে আসছে, যা বিশাল জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যের কাতারে নিয়ে আসতে পারে এমন বলা হয়েছে এক প্রতিবেদনে৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
২০২০ সালে আফ্রিকার সরকারগুলো প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের রাজস্ব হারাবে। মহামারির পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম কমায় তারা এই সংকটে পড়বে। গর্ডন ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস সায়েন্সের ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ এবং ফ্রেডেরিক এস পার্ডি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ফিউচার্সের এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এছাড়াও মুদ্রার অবমূল্যায়ন কয়েকটি দেশের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তাদের ঋণ আর সুদের বোঝা এর মধ্যে প্রায় চার হাজার কোটি ডলার ছুঁয়েছে। এই অবস্থা যে সামনের দিনে কেটে যাবে তা নয়। কেননা প্রতিবেদনে অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০৪০ পর্যন্ত আগামী কুড়ি বছরে আফ্রিকার গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে মোটে চার ভাগের মতো।
করোনার কারণে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে মহাদেশের এক কোটি ২০ লাখ মানুষ নতুন করে হতদরিদ্র্য হয়ে পড়েছেন। আগামী বছর নাগাদ যা দুই কোটি ৬০ লাখে পৌঁছাতে পারে। ভয়াবহ তথ্য হল, ২০৩০ সাল নাগাদ আফ্রিকার হতদরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৫৭ কোটিতে। তবে প্রতিবেদন বলছে, মহামারি প্রলম্বিত হলে সেখানকার এমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬৩ কোটি ছাড়াতে পারে।
ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের সাবেক নির্বাহী পরিচালক জেকি সিলিয়ার্স ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘(আফ্রিকার দেশগুলোর) সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ (অর্থনৈতিক) প্রবৃদ্ধি৷’ তার মতে কোভিড-১৯ তাদের অর্থনীতিকে মারাত্মক সংকটে ফেলবে। যার প্রভাব পড়তে পারে এমনকি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে আর মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও। তবে এর মধ্যে আশার আলো দেখছেন ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের সদস্য এবং জার্মান হ্যানস সাইডেল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মার্কুস ফের্বার। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকা চরম বিপর্যয়ে পড়বে, কিন্তু এই সংকট তাদের জন্য টেকসই অর্থনৈতিক রূপান্তরেরও একটি সুযোগ করে দিবে।’
‘ডেথ, ডেবট অ্যান্ড অপরচ্যুনিটি-দ্য কস্ট অফ কোভিড-১৯ ইন আফ্রিকা’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি আফ্রিকাকে সহযোগিতার আহবান জানানো হয়েছে। দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ স্থগিত রাখা অথবা মওকুফ করে দেয়ারও আবেদন জানানো হয়েছে, যার মাধ্যমে তারা মহামারি থেকে উত্তরণের সুযোগ পাবে।
এমএস/এসি