ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২১ ১৪৩১

ভারতে আক্রান্ত পাঁচ লাখ ছুঁই ছুঁই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৬ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের ন্যায় পাল্লা দিয়ে করোনা শনাক্ত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে। চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশটিতে করোনা মহামারি রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে ভাইরাসটির শিকার প্রায় সাড়ে ৫ রাখ ভারতীয়। এর মধ্যে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। 

দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৪৫৯  জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। একদিনের নিরিখে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই তিন রাজ্যের (মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু)। 

একইসময়ে প্রাণহানি ঘটেছে ৩৮০ জনের। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৭৫ জনের মৃত্যু হল করোনায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮২ লাখ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৪২৯ জন মারা গেছেন মহারাষ্ট্রে। রাজধানী দিল্লিতে দু’হাজার ৬২৩ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাটে এক হাজার ৮০৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। 

হাজার পেরনোর তালিকায় ঢুকে পড়েছে তামিলনাড়ুও। সেখানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৭৯ ছুঁয়েছে। উত্তরপ্রদেশ (৬৬০), পশ্চিমবঙ্গ (৬৩৯), মধ্যপ্রদেশ (৫৫৭), রাজস্থান (৩৯৯)-এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা (২৪৭), হরিয়ানা (২২৩), কর্নাটক (২০৭), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৬৯), পঞ্জাব (১৩৩)।

আক্রান্তের নিরিখে সবার উপরে সেই মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৪ হাজার ৬২৬ জনে দাঁড়িয়েছে রাজ্যটিতে। এর পরই দিল্লি ও তামিলনাড়ু। সেই দুই রাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে ছুটে চলেছে। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্ত ৮৩ হাজার ৭৭ জন। আর   তামিলনাড়ুতে করোনার শিকার ৮২ হাজার ২৭৫ জন। আক্রান্তের নিরিখে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাট (৩১ হাজার ৩২০) ও উত্তরপ্রদেশ (২২ হাজার ১৪৭)। 

এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (১৭ হাজার ২৮৩), রাজস্থান (১৭ হাজার ২৭১), তেলঙ্গানা (১৪ হাজার ৪১৯), হরিয়ানা (১৩ হাজার ৮২৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩ হাজার ২৪১), কর্নাটক (১৩ হাজার ১৯০), মধ্যপ্রদেশ (১৩ হাজার ১৯৬)। এরপর আছে বিহার, অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা ও পঞ্জাবের মতো রাজ্য, যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।

গত তিন চার দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও গড়ে ৫০০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭২ জন। এই বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২৮৩ জনে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৩৯ জনের। 

তবে, আশার কথা হলো ভারতে আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যা ইতিমধ্যেই তিন লাখ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায়ও ১২ হাজার ১০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ৭২৩ ভুক্তভোগী।

উল্লেখ্য, ভারতের সংক্রমণ এক থেকে দুই লাখ হতে ১৫ দিন, দুই থেকে তিন ১০ দিন। তিন থেকে চার ৮ দিন। আর সবশেষ চার থেকে পাঁচ লাখে পৌঁছতে লাগে মাত্র ছয়দিন। এভাবেই করোনা দাপট দেখাচ্ছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। 

সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমদিকে সামাজিক দূরত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন লকডাউনের কড়াকড়ি নেই। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় বাজার-হাট, গণপরিবহনে বেড়েছে লোকের ভিড়। বেড়েছে একে অপরের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাও। তাই, প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এই হারে যদি বাড়তে থাকে তাহলে ছয় লাখে পৌঁছতে আরও কম সময় লাগবে।

এআই//