ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

লঞ্চটিকে মুহূর্তেই ডুবিয়ে দিলো দৈত্যাকার ময়ূর-২ (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩১ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার

লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার আগমুহূর্তের চিত্র।

লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার আগমুহূর্তের চিত্র।

রাজধানীর ফরাশগঞ্জ-শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে গেছে মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ। সোমবার সকাল ১০টা দিকে প্রায় ১০০ যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়ার এ ঘটানায় দুপুর ৩টা পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৩৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। 

ডুবুরিরা জানান, লঞ্চটি নদীর তলাদেশে উপুড় হয়ে আছে। ভেতরে কত জনের লাশ আছে তা বোঝা যাচ্ছে না। শেষ ৭-৮টি মৃতদেহ ডুবে থাকা লঞ্চটির আশেপাশে ভাসমান অবস্থায় পেয়েছেন তারা। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৮ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছেন। নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

প্রাণহানির এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাস্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে মৃতের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া লাশ দাফনের জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

জানা যায়, সোমবার সকালে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামের একটি বিশালাকায় লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় মর্নিং বার্ড নামের ছোট লঞ্চটি। এ সময় বেশ কয়েকজন যাত্রী সাঁতার কেটে তীরে উঠে আসলেও নিখোঁজ থাকেন অনেকেই। 

লঞ্চ দুর্ঘটনার সময় সদরঘাটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বুড়িগঙ্গায় মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা 'মর্নিং বার্ড' নামের যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ সদরঘাটের জেটিতে থামতে এগিয়ে আসছিল। ঠিক একই সময়ে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ লঞ্চটি সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু মর্নিং বার্ড লঞ্চটি যখন ময়ূর-২ লঞ্চকে অতিক্রম করছিল, ঠিক তখনই মর্নিং বার্ডের উপর দিয়ে উঠে গিয়ে তাকে চাপা দিয়ে ডুবিয়ে দেয় দৈত্যাকার ময়ূর-২। এ সময় মর্নিং বার্ড লঞ্চে প্রায় ১০০ শত যাত্রী ছিল বলে জানা যায়।

যার মধ্যে কয়েকজন সাঁতরে জীবন বাঁচালেও এখন পর্যন্ত ৩৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অনেকে এখনও নিখোঁজ আছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের সদস্য ও স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ- এর যুগ্মপরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) একেএম আরিফ উদ্দিন জানান, সিসি ক্যামেরার দুর্ঘটনার বিষয়টি ধরা পরেছে। তদন্ত টিম অবশ্যই তদন্তে এই ফুটেজ কাজে লাগাতে পারবেন।

এদিকে, লঞ্চটি উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে রওয়ানা দেয় উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। তবে আসার পথে পোস্তগোলা ব্রীজে জাহাজটি আটকে গেছে বলে জানা গেছে। তাই বিকল্প উপায়ে ডুবন্ত লঞ্চটি উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর কমোডর গোলাম সাদিক বলেন, ‘এতো দ্রুত আমরা সব করতে পেরেছি যা অকল্পনীয়। এখন পর্যন্ত ৩৬টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। ডবুরীরা এখন ঘটনাস্থল থেকে দূরে গিয়ে খোঁজ করছে, কোথাও লাশ ভেসে যাচ্ছে কিনা।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীদের মধ্যে যারা ভেতরে ছিলেন তারা সবাই বের হতে পারেননি। কিছু যাত্রী যারা বাইরে ছিলেন তারা সাঁতরে তীরে উঠেন। নারী, শিশু এবং বৃদ্ধরা বের হতে পারেননি।

ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া ঠিক কতজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, সেটাও স্পষ্ট নয়।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১০০ জন যাত্রী ছিলেন ঐ লঞ্চে। এর মধ্যে প্রায় ৭০ জন নিখোঁজ হয়ে যান।

দেখুন দুর্ঘটনার ফুটেজটি-

এনএস/