করোনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:০১ পিএম, ৩০ জুন ২০২০ মঙ্গলবার
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভেন্টিলেটরে যাওয়া রোগীদের প্রায় সবায় মারা গেছেন। তাই করোনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরের কোনো প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দেশের ৪০০ ভেন্টিলেটরের মধ্যে সাড়ে তিনশ ব্যবহারই হয়নি। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ায় কোনো দুর্নীতি হয়নি বলেও দাবি মন্ত্রীর।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে আইন মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাটাই প্রস্তাব নিয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদে দাঁড়িয়ে আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আইসিইউ নিয়ে অনেক কথা হলো। ভেন্টিলেটর নিয়ে বিরাট হৈ-চৈ। কিন্তু দেখা গেছে, ভেন্টিলেটরের কোনো প্রয়োজনই নেই। ভেন্টিলেটরে যারা গেছেন তাদের প্রায় সকলেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের চারশ ভেন্টিলেটর আছে। এর মধ্যে ৫০টিও ব্যবহার হয়নি। সাড়ে তিনশত ভেন্টিলেটর খালি পড়ে আছে। কারণ তখণ মানুষ এটা জানতো না।
করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থা ওষুধ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে’ বলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় দাবি করেন। তিনি বলেন, করোনার কী চিকিৎসা লাগবে ডব্লিউএইচও তা বারেবারে চেঞ্জ করেছে। আমাদেরও সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে। কেউ কিন্তু আগে বলেনি, পিপিই লাগবে। যখন বলা হলো তখন সারা বিশ্ব লকডাউন। এই লকডাউনের কারণে আমরা পিপিই পাচ্ছিলাম না। যন্ত্রপাতি পাচ্ছিলাম না। পরে আস্তে আস্তে ব্যবস্থা করছি। এখন আর সেই অভিযোগ নেই। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। এখন হাইফ্লো অক্সিজেনের প্রয়োজনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা এক হাজার অক্সিজেনের অর্ডার দিয়েছি। প্রায় ১০ হাজার নতুন সিলিন্ডার বানানো হয়েছে। সরকার কাজ করেছে বলেই মৃত্যুর হার কম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের থাকা-খওয়ার বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি। কাল রাতে আমি এটা দেখেছি। ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। সেখানে তিন হাজার ৭০০ মানুষ এক মাস থেকেছে। প্রত্যেকটি রুমের ভাড়া এগারোশত টাকা। খাওয়ার খরচ যেটা বলা হয়েছে, তা টোটালি রং। সেখানে দিনের তিনটি মিলের জন্য খরচ ৫০০ টাকা হয়েছে।
এর আগে ছাটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। গতকাল সোমবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ২০ কোটি টাকা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। এত অস্বাভাবিক কেন হবে? যদি কোনো অনিয়ম হয় আমরা ব্যবস্থা নেব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, সংসদ সদস্যরা সংসদে আমাদের কেবল দোষারোপ করে গেছেন। আমরা কী কাজ করেছি তা আসেনি তাদের বক্তব্যে। কোভিড আসার শুরু থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চীনে কোভিড দেখা দেয়ার পরপরই আমরা পোর্টগুলোতে স্ক্রিনিংসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রত্যেক জেলা-উপজেলার হাসপাতালে কোভিডের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছি। আমরা জাতীয়পর্যায়ে কমিটি তৈরি করেছি। ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই হার ভারতে ৬ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ শতাংশ। এটা এমনিতেই হয়নি। সকলে কাজ করেছে বলেই এটা হয়েছে।
আরকে//