ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

হারিয়ে যাওয়া পম্পেইর দিনগুলো (ছবি ঘর)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৮ পিএম, ২ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১০:৫৭ পিএম, ২ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার

বিলুপ্ত পাম্পেই নগরী- ব্রিটানিকাডটকম

বিলুপ্ত পাম্পেই নগরী- ব্রিটানিকাডটকম

২০০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির লাভায় ঢেকে যায় প্রাচীন রোমান নগরী পম্পেই। তবে থ্রিডি প্রযুক্তিতে সেই শহরের জীবনযাত্রা দেখার সুযোগ মিলছে প্যারিসে।

সময়ের পিঠে অতীতে ভ্রমণ:
পম্পেইর রাস্তায় খেলছে শিশুরা। অভিজাত কোনো নারী হয়তো বেরিয়েছেন ভ্রমণে। ৭৯ খ্রিস্টপূর্বের কোনো এক বিকেল হয়তো এমনই ছিল পম্পেইতে। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন শহরের খ্যাতি ছিল তার। ভিসুভিয়াসের পাদদেশে সেখানকার উর্বর মাটিতে আঙ্গুরের চাষ হতো। সমুদ্রের তীর ঘেঁষে মনোরম পরিবেশে থাকতেন শহরের অনেক বাসিন্দা।

বিলাসী নগর:
৬০ হেক্টর জুড়ে ছিল পম্পেইর বিস্তৃতি। নগরবাসীর নিরপত্তায় ছিল আটটি ফটক আর ১১ টি ওয়াচ টাওয়ার। অভিজাতদের জন্য ছিল উষ্ণ আর শীতল জলের সুইমিং পুলের ব্যবস্থা। ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজনের জন্য থিয়েটার, খেলাধুলার স্টেডিয়াম৷ শহরের কেন্দ্রে ছিল জুপিটারের মন্দির।

দৃষ্টিনন্দন ভবন:
২০০০ হাজার বছর আগের পম্পেইর প্রচলিত বাড়িগুলো দেখতে এমনই ছিল। ধনীরা অবশ্য আরো বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করতেন। কয়েক তলা ভবনের মেঝে আর দেয়াল সুসজ্জিত ছিল মোজাইক পাথরের ম্যুরালে।

রহস্যজনক বাড়ি:
পম্পেইর অক্ষত স্থাপনাগুলোর একটি এটি৷ ওয়াইন ও আনন্দের দেবতা ডায়োনিসাসের পূজা হতো এখানে। তবে ১৮৬ খ্রিষ্টপূর্বে ডায়োনিসাসের উৎসব বাতিল করে সেনেট। যদিও গোপনে ঠিকই উদযাপন চলত।

দেবী ডায়নার আশীর্বাদ:
পম্পেইর সব নাগরিক যে স্বচ্ছল ছিলেন তা নয়। কৃষক আর বেকারি কিংবা মিলের শ্রমিকরা দরিদ্রের জীবনই যাপন করতেন। ছবির এই ভাস্কর্যটি দেবী ডায়নার।

পুননির্মাণ:
৭৯ খ্রিষ্টপূর্বে পম্পেই পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়ার ১৭ বছর আগে আরও একবার জেগে উঠেছিল ঘুমন্ত ভিসুভিয়াস। তখনও অনেক ভবন ধসে পড়েছিল। পরবর্তীতে সেগুলো আরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুনর্নির্মাণ করা হয়। তখন কে ভেবেছিল তাদের এই নগরী কয়েক বছরের মাথায় ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

বাঁচার ব্যর্থ চেষ্টা:
২৪ আগস্ট ভিসুভিয়াসের লাভার উদগীরণ ঘটলো৷ কাদা আর পাথরের স্রোত নেমে এলো পম্পেইর উপরে। প্রস্তরখণ্ডে চাপা পড়ে কিংবা ছাইয়ে দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেন অনেকে। যারা সেখান থেকে কোন রকমে বাঁচতে পারলেন তাদের অনেকের সমাধি ঘটলো জ্বলন্ত লাভার নীচে। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ছিল সেটি আজও টের পাওয়া যায় ভাস্কর্যে পরিণত মানুষগুলোকে দেখে।

হারিয়ে যাওয়া নগরী:
পম্পেইর ২০ হাজার বাসিন্দার দুই হাজার শেষ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তারা পালিয়ে গিয়েছিলেন অন্য শহরগুলোতে। ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতায় বিস্মৃত হলো পম্পেই। ১৫৯৪ সালে খাল খনন করতে গিয়ে শ্রমিকরা প্রাচীন শিলালিপি আর মূর্তি খুঁজে পান। তারও ২০০ বছর পর স্পেনের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের অধীনে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ শুরু হয়।

অক্ষত প্রাচীন নগরী:
৭ মিটার বা ২৩ ফুট ছাইয়ের স্তর সরিয়ে পম্পেইকে তুলে আনার মূল কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৬০ সালে। এমনকি এখনও পম্পেইর অনেকটাই চাপা পড়ে আছে। তবে ভিসুভিয়াসের লাভায় পম্পেই বলতে গেলে প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণার জন্য অক্ষত এক নগরী হিসেবেই টিকে আছে।

ত্রিমাত্রিক পম্পেই:
লাভায় চাপা পড়া পম্পইকে নতুন করে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে দ্য গ্র্যান্ড প্যালেস মিউজিয়াম ইন প্যরিস। বিভিন্ন প্রত্ননিদর্শনতো আছেই, সাথে ত্রিমাত্রিকে প্রাচীন শহরটি ঘুরে দেখতে পারছেন দর্শনার্থীরা। এক জুলাই থেকে শুরু হয়ে প্রদর্শনী চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। (ডয়চে ভেলে)

এমএস/এসি