ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনায় শিশুদের ডায়রিয়া হলে কী করবেন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৫ পিএম, ৩ জুলাই ২০২০ শুক্রবার

কোভিড-১৯ সঙ্গে ডায়রিয়া জীবাণুর সক্রিয়তা রয়েছে। এই রোগে সংক্রমণ হলে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা বা বমির মতো উপসর্গ দেখা যেতে পারে। এক দিকে ভ্যাপসা গরম ও অন্যদিকে বৃষ্টি এরকম আবহাওয়ায় পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই সতর্ক থাকা উচিত। বিশেষ করে যেসব বাচ্চার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম, তাদের প্রতি বাড়তি নজর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে যাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য খারাপ, তাদের ডায়রিয়াসহ যে কোনও সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এ ছাড়া এদের বারে বারে সংক্রমণ হয় বলে পুষ্টির একটা ঘাটতি থেকে যায়। তাই যে কোনও সংক্রমণই এদের জন্যে মারাত্মক হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম।

তাই করোনাকালে ডায়রিয়া এড়াতে কিভাবে নিবেন বাচ্চাদের বাড়তি যত্ন, এবার তা জেনে নিন...

মুখে হাত দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করুন

বর্ষাকালে জিয়ার্ডিয়াসিস, অ্যামিবায়োসিস, কৃমি ইত্যাদির কারণে পেটের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে এই করোনার সময়ে ছোট বাচ্চাদেরও হাত ধোয়া ও মুখে হাত দেওয়ার অভ্যাস ছাড়ানোর ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অবশ্যই পানি ফুটিয়ে খাওয়াতে হবে বাচ্চাদের। এছাড়া বাড়িতে মাছি বা পোকামাকড়ের উপদ্রবও বন্ধ করতে হবে।

ওরস্যালাইন দিতে ভুলবেন না

ডায়রিয়ার কারণে বাচ্চাদের শরীরে দ্রুত ডি-হাইড্রেশন দেখা দেয়। শরীরে পানির অভাব হলেই বাচ্চা ক্রমশ নেতিয়ে পড়ে। তাই ডায়রিয়া শুরু হলেই বারে বারে ওরস্যালাইন খাওয়ানো বাধ্যতামূলক। এই ব্যাপারটা অনেকেরই জানা, তবুও অনেক মা-বাবা গড়িমসি করেন। আর তাতেই বাচ্চার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। তবে ওরস্যালাইন খেলেও অনেক সময় বাচ্চা বারে বারে বমি করে।

এ ক্ষেত্রে পানি খাওয়ানোই মুশকিল হয়ে যায়। এই রকম হলে বমির ওষুধ দিয়ে বমি বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। তাতেও কাজ না হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।

মাতৃদুগ্ধ ছাড়া কোনও দুধ নয়

ডায়রিয়া হলে বাচ্চা খেতে চায় না বলে অনেক মা খাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু না খাওয়ালে শিশু আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ছোট শিশু অবশ্যই মায়ের দুধ খাবে। এছাড়া ভাত, ডাল, ঝোল, মাছ, কলা সব স্বাভাবিক খাবার দিতে হবে। এই সময় বাইরের দুধ, গমজাত খাবার যেমন রুটি দেবেন না। তবে দুধের পরিবর্তে বাড়িতে পাতা দই এবং এ দিয়ে পাতলা ঘোল দেওয়া যেতে পারে।

বমি হলে শক্ত খাবার দেওয়া উচিত। অল্প অল্প করে বার বার ওরস্যালাইন এবং লেবুর সরবত, পাতলা ডাল বা স্যুপ দেওয়া যেতে পারে।

পেটের সমস্যা প্রতিরোধে টিকা জরুরি

অনেক সময় শিশুদের পেটের সংক্রমণ মারাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। ডায়রিয়ার সঙ্গে হাম থাকলে অথবা শ্বাসনালীর সংক্রমণ থাকলে এবং ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে বাচ্চার অসুখ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এ ছাড়া রোটা ভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুমৃত্যুর এক অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিশুরা এই ভাইরাল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু না করলে মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে যেতে পারে।

রোটা ভাইরাস বা সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যে কোনও সময়ই হতে পারে। আর এই দুধরনের সংক্রমণ বাচ্চাদের বেশি অসুস্থ করে তোলে। রোটা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হলে মারাত্মক ডায়রিয়ায় শিশু মৃত্যুর হার অনেকটাই কমানো সম্ভব। হাম আর ডায়ারিয়া একসঙ্গে হলে বাচ্চার অবস্থা জটিল হয়ে ওঠে। তাই হামের টিকাও দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, করোনার সময় বাচ্চা যাতে অসুস্থ হয়ে না পরে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। সূত্র : আনন্দবাজার

এএইচ/ এমবি