ঢাকা, রবিবার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২০ ১৪৩১

মনে পড়ে গেলো সেই দিনগুলোর কথা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৮ পিএম, ৩ জুলাই ২০২০ শুক্রবার

সহকর্মীদের সঙ্গে লেখক (বাঁয়ে)।

সহকর্মীদের সঙ্গে লেখক (বাঁয়ে)।

সময় এবং পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে অনেক সময় নিজের ইচ্ছে এবং স্বপ্নকে মাটি চাপা দিতে হয়। ইন্টারমিডিয়েট (এইএসসি) পরীক্ষা দিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না, হোস্টেল থেকে চলে গেলাম ভার্সিটি ভর্তি কোচিং করতে। দুচোখ ভরা ছিলো অনেক স্বপ্ন। তবুও বাস্তবতার কাছে আমার স্বপ্নগুলো তখন শুধুই ধোঁয়াশা ছিলো।

যাই হোক, কোচিং-এর মাঝপথে বান্ধবীদের দিকনির্দেশনা মোতাবেক আমার লক্ষ্য পরিবর্তন করে ফেলি। তাদের কথামতো নার্সিং-এর জন্য আবেদন করি, আমার সাথে তারাও আবেদন করে। নার্সিং বিষয়ে আমার কোন ধারণা ছিলো না তখন, এমনকি নার্স কি জিনিস বাস্তবেও দেখিনি। যাইহোক, যথারীতি রেজাল্ট পেলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমার বান্ধবীদের চান্স হয়নি, তখন আমার প্রচণ্ড খারাপ লাগে। আমি একা একা কিভাবে কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।

সহপাঠীদের সঙ্গে লেখক (বাঁয়ে)

অবশেষে, মনটা স্থির করে নার্সিং পড়ার উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল চলে যাই। নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষের সাথে মিশতে সময় লেগেছিলো। ডিসিপ্লিন কি জিনিস, নার্সিং না পড়লে হয়তো বুঝতেই পারতাম না। এতো নিয়ম-কানুন জীবনেও শুনি নাই। প্রথম প্রথম অনেক কষ্ট হয়েছিলো নিজেকে মানিয়ে নিতে। সমস্ত বন্ধু বান্ধবীদের কাছ থেকে ডিসকানেক্ট হয়ে গেলাম। বেশ কয়েকবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নার্সিং পড়বো না, বাড়ি চলে যাবোই। এতো কষ্ট মেনে নিতে পারছিলাম না।

কিছুদিন যাওয়ার পর আমার সহপাঠীরা, আমার টিচাররা আমাকে এমনভাবে আপন করে নিলেন, আমাকে এত সুন্দর করে বুঝালেন যে, আমি আর ফিরে আসতে পারলাম না। যার প্রেক্ষিতে এখন এই পেশাককেই অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। মানুষের ক্রান্তিলগ্নে, মুমূর্ষু মুহূর্তে মানুষের পাশে থাকতে পারি। দিনশেষে এটাই বড় প্রাপ্তি।

আমি আমার বান্ধবীদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাদের কারণেই আজ আমি একজন নার্সিং কর্মকর্তা হতে পেরেছি। 

লেখক- সিনিয়র স্টাফ নার্স, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।

এনএস/