গ্রিসে ‘বিক্ষোভ বিরোধী’ আইনের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৩ এএম, ১১ জুলাই ২০২০ শনিবার
এথেন্সের রাস্তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল রণক্ষেত্র- রয়টার্স
বিক্ষোভ বন্ধ করার জন্য কড়া আইন প্রণয়ন করেছে গ্রিসের সরকার। তার বিরুদ্ধেই বিক্ষোভে উত্তাল হলো গ্রিস। এথেন্সের রাস্তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল রণক্ষেত্র। রাস্তায় একের পর এক পেট্রোল বোমা ফেলেছে বিক্ষোভকারীরা। জ্বলছে আগুন। সেই আগুনের ফাঁক দিয়ে তেড়ে গেল পুলিশ। সোজা বিক্ষোভকারীদের দিকে। শুরু হলো কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো। বিক্ষোভকারীদের দিকে ফ্ল্যাশ গ্রেনেডও ছুঁড়ল পুলিশ। ধোঁয়ায় ভরে গেল পুরো জায়গাটা। খবর রয়টার্স, এপি ও ডয়চে ভেলে’র।
সরকারের প্রস্তাবিত নতুন আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে রাস্তায় নেমেছিলেন এথেন্সসহ গ্রিসের ৪০টি শহরের লোক। এই আইনে বিক্ষোভ বন্ধ করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এথেন্সের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়েছিলেন প্রায় দশ হাজার প্রতিবাদকারী। তাদের অধিকাংশই গ্রিক কমিউনিস্ট পার্টির শ্রম ইউনিয়নের ডাকে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন।
তবে পেট্রোল বোমা ছোঁড়ে কিছু তরুণ বিক্ষোভকারী। এরপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাসে বিপাকে পড়েন মহিলারা, যারা বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে থাকেন। পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে কড়াকড়ি বিষয়ে প্রস্তাবিত বিল নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক শেষ হয়। পরে ভোটাভুটির সময় ৩০০ সদস্যের পার্লামেন্টে ১৮৭ জন বিলের পক্ষে ভোট দেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিটসোটাকিস বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার রক্ষা করা হবে। কিন্তু বিক্ষোভ এমনভাবে দেখাতে হবে যাতে শহরের জীবনযাত্রায় কোনও প্রভাবনা পড়ে। রাস্তায় গাড়ি চলাচল বা বাণিজ্যিক কাজকর্ম বাধা পায় এমন বিক্ষোভ তারা বরদাস্ত করবেন না। দেশের সব শহরের সিটি সেন্টারে হামেশাই ছোট ছোট বিক্ষোভ হচ্ছে। সেখান থেকে ভাঙচুর হচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। প্রতিবাদের অধিকার যেমন আছে, তেমনই লোকের হাসপাতালে যাওয়ার অধিকারও আছে।’
পার্লামেন্টের রিভিউ কমিটি, এথেন্স বার অ্যাসোসিয়েশন, ট্রেড ইউনিয়নসহ একাধিক সংস্থা আইন পরিবর্তনের বিরুদ্ধে। তাদের যুক্তি, অনুমোদিত নয় এমন বিক্ষোভবা প্রতিবাদ সভা করা হলে আয়োজনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর প্রতিবাদে হিংসা হলে আয়োজনকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনত অসুবিধা আছে বলে তারা মনে করছেন।
সম্প্রতি ভারতেও উত্তর প্রদেশ সরকার একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের সময় সরকারি সম্পত্তির যে ক্ষতি হয়েছিল, তার সমপরিমাণ অর্থ বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে নেওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছিল। তখন এ নিয়ে মামলা হয়। গ্রিসে সরকার জানিয়েছে, তারা এই সব আপত্তি নিয়ে একাধিকবার তাদের মত জানিয়েছে। এ বার তারা নতুন আইন কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর।
এমএস/