কুয়েতে পাপুলের ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা গ্রেফতার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ রবিবার
কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে নানা অবৈধ কাজে সহায়তা করার অভিযোগে দেশটির মেজর জেনারেল শেখ মাজেম আল জারাহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে পাবলিক প্রসিকিউশন। এর ভিত্তিতেই শুক্রবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। বরখাস্তের আগ পর্যন্ত মাজেন আল-জাররাহ নামের এই কর্মকর্তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মাজেন আল-জাররাহ-এর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ছাড়াও বাংলাদেশের এমপি শহীদুল ইসলাম পাপুলের সঙ্গে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, কুয়েতের নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট ও রেসিডেন্স বিষয়ক দফতরের দায়িত্বে থাকাকালে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাপুলের বেশ কিছু কাজ দ্রুত অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছেন।
অর্থ, মানবপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে গত ৬ জুন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলকে আটক করে কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতারের পর তার নাম সামনে আসে। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২৪ জুন এমপি পাপুলকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পাপুলকে গ্রেফতারের পর তার সঙ্গে কুয়েতের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশের প্রমাণ হাতে পায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কর্মকর্তারা জানতে পারেন, এমপি পাপুলের জন্য ২৩ হাজারের বেশি কর্মীর এন্ট্রি ভিসার অনুমোদনে সহায়তা দিয়েছেন কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ।
এসব তথ্য সামনে আসার পরই মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে কর্তৃপক্ষ।
কুয়েতে পাপুলকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে কীভাবে বাংলাদেশের এই এমপি মানুষকে প্রতারিত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং এই কাজে তাকে কুয়েতের প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তারাও সহায়তা করেছে ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য সুযোগের বিনিময়ে। এখন পর্যন্ত তদন্তে বের হয়ে এসেছে পাপুল প্রতি বছর বিভিন্ন ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ৬০ কোটি টাকা লাভ করতেন।
এছাড়া পাপুল এবং তার কোম্পানির ব্যাংকে থাকা প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ফ্রিজ করার জন্য ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর। এদিকে, বিদেশের মাটিতে একজন এমপি আটকের ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এসএ/