কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার অ্যান্টিবডি বিলীন!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৫৭ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি পরবর্তীতে তাদের সুরক্ষা দেবে বলে যে আশার কথা বলা হয়েছিল, তা এখন আর থাকছে না। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সুস্থ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই এই অ্যান্টিবডি বিলীন হয়ে যেতে পারে।
লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক দল বলছেন, করোনায় আক্রান্তদের পরবর্তী সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা টেকে মাত্র কয়েক মাস। এরা কয়েক মাস পরই আবার আক্রান্ত হতে পারেন। প্রতিবছরই আক্রান্ত হতে পারেন একই ব্যক্তি, যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি টিকা আসে। তবে টিকাও তাদের নিশ্চিত সুরক্ষা দেবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছে গবেষকদের।
গবেষকরা বলছেন, তবে প্রথমবারের মতো এতো ভয়ঙ্করভাবে নয়। এক বছর পর ফের আক্রান্ত হতে পারেন। সেটি হবে সাধারণ ঠাণ্ডার মতো অবস্থা।
বিজ্ঞানীরা যুক্তরাজ্যের গাইস ও সেন্ট থমাস হাসপাতালের ৯০ জনের বেশি রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করেছেন। করোনার লক্ষণগুলো শুরুর প্রায় তিন সপ্তাহ পরে ভাইরাসটিকে ধ্বংস করতে পারে এমন অ্যান্টিবডির স্তর খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। তারপর সুস্থ ব্যক্তির করোনাপ্রতিরোধী অ্যান্টিবডি দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে।
রক্ত পরীক্ষায় দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ মানুষের দেহে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার শক্তিশালী অ্যান্টিবডি রয়েছে। কিন্তু তিন মাস পরে মাত্র ১৭ শতাংশর মধ্যে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ছিল। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবডির মাত্রা ২৩ গুণ পর্যন্ত কমে যায়। এমনকী কয়েকজনের রক্তে অ্যান্টিবডি শনাক্ত পর্যন্ত করা যায়নি।
গবেষক দলের প্রধান ড. কেটি ডুরস জানিয়েছেন, ‘আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি হ্রাস পেতে থাকে। আপনি কতটা লড়াই করতে পেরেছিলেন তার উপরও অ্যান্টিবডি কতদিন শরীরে স্থায়ী হবে তা নির্ভর করে।’
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নানাভাবে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু সেই লড়াইয়ের মূল অস্ত্রটি যদি হয় অ্যান্টিবডি তাহলে গবেষণা বলছে, ঋতু পরিবর্তনের সময়কার সর্দি-কাশির মত মানুষ আবার ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে টিকাও হয়ত বেশি দিন সুরক্ষা দিতে পারবে না।
গবেষণাপত্রটি একটি বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নালে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশিত হয়নি। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার গুরুতর আক্রান্তের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি লেভেল বেশি তৈরি হয়। সেই সঙ্গে দীর্ঘকাল স্থায়ীও হয়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এএইচ/এমবি