ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

চার লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ ও ফাইল গায়েব, অভিযুক্ত ৯ শিক্ষক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:১২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার

এবার ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষকের একটি চক্রের বিরুদ্ধে শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতার নামে সরকারের ৪ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে চক্রটি প্রথমিক শিক্ষা অফিস ও হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে অনিয়ম সংক্রান্ত ফাইলপত্র গায়েব করে ফেলেছে বলেও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে, প্রায় এক বছর পূর্বে সরকারি তহবিল থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ গায়েবের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এ চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শুধু দায়সারা একটি শোকজ নোটিশ দিয়ে তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। তবে উক্ত ৯ শিক্ষকের চক্রটির ব্যাংক হিসাবে এ দুর্নীতি ও আত্মসাতের তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে কাঁঠালিয়ার উত্তর আউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মেহেদি হাসান, বাশঁবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মো. মিজানুর রহমান, মধ্যআউরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জেসমিন আক্তার মুকুল, ছিটকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খাদিজা আক্তার, আউরা-জয়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অজিত কুমার নাথ, চেঁচরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেলিনা খানম, পশ্চিম মহিষকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনিল কৃষ্ণ দাস, ছোনাউঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মুকুল আক্তার ও বাঁশবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাহারুম মিয়াসহ ৯ জন শিক্ষকের একটি চক্র শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা তহবিল থেকে অবৈধভাবে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৭০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে সূত্রে আরও জানা যায়, নিয়মানুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৩ বছরে একবার ১৫দিন ছুটি ও ছুটি ভোগকালীন সময়ে মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা নিতে পারেন। কিন্তু ওই নয় শিক্ষকের চক্রটি ২০১৯ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে জালিয়াতীর মাধ্যমে কেউ দুইবার, কেউ তিনবার করে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরবর্তীতে অনিয়মের প্রমাণ লোপাট করতে চক্রটি শিক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্রের ফাইল গায়েব করে ফেলেন। তবে তাদের ব্যাংক হিসাব বিবরণীর মাধ্যমে আত্মসাৎ প্রমাণ মেলায় (বদলি হওয়ার) উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন খলিফা গত ১৬ জুন ২০২০ইং শেষ কার্য দিবসে উক্ত ৯ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও অদৃশ্য কারণে অনিয়মের তদন্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এ বিষয় কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষকদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হলেও তারা কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেন নি। তাই শীঘ্রই তাদের আত্মসাৎকৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য নোটিশ প্রদান ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে’।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামালকে এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে তদন্ত রিপোর্ট পেতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এনএস/