ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

সিংড়ায় বন্যার পানিতে ৪ ইউনিয়ন প্লাবিত 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৭ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার | আপডেট: ১১:৪৮ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২০ বুধবার

নাটোরের সিংড়ায় পানির স্রোতে সিংড়া-তেমুখ নওগাঁ গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অন্তত ১০টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে ওই ভাঙ্গা অংশ দিয়ে দ্রুত বেগে পানি প্রবেশ করায় তাজপুরসহ চারটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তা ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ভারী বর্ষণে সড়কের অন্তত ৬টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। বিষয়টি এলজিইডিকে সড়কটি রক্ষার জন্য বারবার বলার পরও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। এদিকে  সড়কটির ভাগনগরকান্দি এলাকায় দু’টি পয়েন্টে ভাঙ্গনের পর জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের নির্দেশে ভাঙ্গা অংশে বালিভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করছে এলজিইডি।

স্থানীয়রা জানায়, গত দুই মাস আগে সাড়ে ৩কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডি এই সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করে। মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে পানির তোরে এই গ্রামীণ সড়কটির ভাগনাগরকান্দি এলাকার দুটি স্থানে অন্তত ১০ মিটার করে ভেঙে যায়। বর্তমানে ক্রমেই ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ভাগনাগরকান্দি এলাকায় আরো অন্তত ৬টি পয়েন্টে পাকা সড়কে পানি উপচে পড়েছে। এলাকাবাসী ওই সড়কসহ বাড়ি-ঘর রক্ষায় নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে বালির বস্তা দিয়ে পানি রোধের চেষ্টা করছে। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার সকাল থেকে এলজিইডি সড়কটির ভাঙ্গা অংশে বালিভর্তি বস্তা ফেলে তা রক্ষার চেষ্টা করছে। 

তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এই সড়ক ভেঙে পানি ডুকে পড়ায় ইউনিয়নের চরতাজপুর, তাজপুর, ভাদুরীপাড়া, চকনওগা, কমরপুর, বজরাহার, রাখালগাছা গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এলাকাবাসীকে নিয়ে সারারাত কাজ করেও রাস্তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া পানি নাগর নদে উপচে পড়ে চৌগ্রাম, তাজপুর, ইটালী, ডাহিয়াসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ ঝুকিতে পরবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

সিংড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসান আলী সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার কথা শুনে অবাক হন। ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। 

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, অনেক আগেই এলজিইডিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। এই রাস্তা রক্ষায় আমি নিজে উপজেলা পরিষদ খেকে অর্থ বরাদ্দ দিতে চেয়েছি। 

নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নাটোরের আত্রাই নদীর পানি প্রতিনিয়িত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে আত্রাই নদীর সিংড়ায় পয়েন্টে বিপদ সীমার ৪২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে নদী তীর ও নিন্মাঞ্চলে কয়েকশ’মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ ঝুকিঁপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, বন্যা আক্রান্তদের জন্য আগাম প্রস্তুতি নেয়া আছে। আক্রান্ত হলে স্বল্প সময়ে জেলা প্রশাসন তাদের সহায়তায় পাশে থাকবে। ইতিমধ্যে তেমুক সড়কের ভাঙ্গা অংশে এলজিইডিকে বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কেআই/