ঈদে বাড়ি ফেরার সুযোগ পাচ্ছে রাজধানীবাসী (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৩ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার
ঈদের সময় রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরবাসী মানুষের গ্রামে ফেরা আমাদের ঐতিহ্যে রূপ নিলেও তাতে বাধ সেধেছে করোনা মহামারি। ঈদুল ফিতরের সময় বন্ধ ছিল গণপরিবহন, চলাচলেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। স্বাভাবিকভাবে বাড়ি ফেরার সুযোগ ছিল না কারো। যদিও গত ঈদে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি ফেরার সুযোগ দিয়েছিল সরকার।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্ট দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও গত কয়েক মাসের কড়াকড়ি অবস্থা থেকে বেরিয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে জীবনযাত্রা।
অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন- ঈদে বাড়ি ফেরা যাবে কী?
উত্তর হ্যাঁ; এবার করোনা ঝুঁকির মধ্যেই ঈদে বাড়ি ফেরার সুযোগ পেয়েছে রাজধানীবাসী। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা সহজ করতে টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে অনলাইনে এবং কাউন্টারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকেট বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনলাইনে এবং কাউন্টারে বাস, লঞ্চের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এখনও যাত্রীদের সাড়া মেলেনি।
বাস ও লঞ্চ মালিকরা বলছেন, ঈদের আগ মুহুর্তে যাত্রী-চাপ বাড়বে। আর যাত্রাপথে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে নৌযান মালিক সমিতি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর আরামবাগের বাস স্ট্যাডের বেশিরভাগ কাউন্টার ছিলো ফাঁকা। কাউন্টারকর্মীরা বলছেন, নির্ধারিত ভাড়ায় বাস চলছে তারপরও যাত্রী নেই। ঈদের টিকেট নিতেও আসেনি কেউ।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ছিল অভিন্ন চিত্র। অনলাইন সেবার মান কাঙ্খিত পর্যায়ে নয় তাই যাত্রী সাড়া নেই বলছেন লঞ্চকর্মীরা।
লঞ্চ মালিক সমিতি বলছে, এবারের ঈদ যাত্রায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করারা পদক্ষেপ নেয়া হবে। তারা জানান, করোনর প্রভাবে যাত্রী সংখ্য খুব কম।
লঞ্চ মালিক সমিতি আরও জানিয়েছে, এবারের ঈদ যাত্রার সময় আবহাওয়া বৈরী থাকতে পারে, এ কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় আছে তাদের।
মার্চ মাসের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম ধরা পড়ে। পরিস্থিতি ক্রমাবনতির দিকে যেতে থাকলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী গত ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিল। পরে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস খুলে দেয়া হয়, চালু করা হয় গণপরিবহন। পরে এই ব্যবস্থা ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এখন তা বহাল থাকবে ১ জুলাই থেকে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত।
এদিকে কেউ কেউ বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখন গণপরিবহন চলাচল করলেও ঈদের সময় তা অব্যাহত থাকলে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ঈদের সময় চলাচলের সুযোগ করে দিলে একসঙ্গে অনেক মানুষ হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবে না। সরকারও এত মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
ঈদে বাড়ি ফেরা যাবে কি-না এ নিয়ে কিছুদিন আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আপাতত আমরা বলছি, বর্তমানে অফিস ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেভাবে চলছে সেভাবেই আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। কোরবানির সময় লোকজনের বাড়ি ফেরার বিষয়টি আপাতত প্রজ্ঞাপনে নেই। কোরবানির সময় লোকজন বাড়ি ফিরতে পারবে কি-না, পারলেও কোন প্রক্রিয়ায় পারবে সেই বিষয়ে পরে জানানো হবে।’
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর মধ্যে আসন্ন ঈদুল আজহার ৫ দিন আগে থেকে এবং ঈদের ৩ দিন পর পর্যন্ত মোট ৯ দিন পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে তা গণপরিবহন নয়, বন্ধ থাকবে যেকোনো ধরনের পণ্যবাহী যানবাহন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রথমে গণপরিবহন বন্ধের কথা জানালেও পরে পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন। ঈদুল আজহার আগে গণপরিবহন বন্ধের নির্দেশনাকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গণপরিবহন নয়, বন্ধ থাকবে পণ্য পরিবহন।’
এসএ/