ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রিমান্ডে মুখোমুখি আরিফ ও সাবরিনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার

ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও আরিফ চৌধুরী- ফাইল ছবি

ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও আরিফ চৌধুরী- ফাইল ছবি

পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ’র (ডিবি) রিমান্ডে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মুখোমুখি করা হয়েছিল জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক (বরখাস্ত) ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে। আজ বৃহস্পতিবারও তাদেরকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। করোনা রিপোর্ট জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে গ্রেফতারকৃতদের মুখোমুখি করা হচ্ছে। বুধবার আরিফকে দেখে সাবরিনা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। 

আরিফকে উদ্দেশ করে সাবরিনা বলেন, ‘তোর জন্যই আজ আমার এই অবস্থা। তুই আমাকে শেষ করে দিয়েছিস। সবকিছু করে এখন আমাকে ফাঁসিয়েছিস।’ আরিফও পাল্টা জবাবে বলেন, ‘সব দোষ কি আমার? তুমি তো এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলে। তুমিও জানতে সবকিছু।’ জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা দাবি করেন, জেকেজি ও ওভাল গ্রুপের অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আরিফ চৌধুরীর এই কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত হয়রানির কারণে তিনি তাকে ডিভোর্সও দিয়েছেন। তবে আরিফ বলেছেন, ‘সাবরিনার কারণে তিনি এই অপকর্মে জড়িয়েছেন।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘জেকেজি অনলাইনে বেশি অভিযোগ করতো। তারা টাকা কোথায় রেখেছে তা খোঁজা হবে। ব্যাংকগুলো খতিয়ে দেখা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাবরিনার রিমান্ড আজ শেষ হবে। আরিফ আজ রিমান্ডে আসছে। সাবরিনাকে ফের  রিমান্ডে এনে মুখোমুখি করা হবে। এই কোম্পানিতে কার কী অবদান, কার কী দায়িত্ব ছিল তা তদন্ত করে দেখা হবে। যার যতটুকু দায় সেই অনুযায়ী তদন্ত করে দেখা হবে।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জেকেজি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতো। এসব নমুনা পরীক্ষা না করে তা ড্রেনে ফেলে দেওয়া হতো। পরে রোগীর লক্ষণ দেখে ভুয়া সনদ দেওয়া হতো। জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ চৌধুরী নিজেও এসব বিষয় স্বীকার করেছেন। এছাড়া জেকেজির একজন কর্মচারী আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও এসব তথ্য জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতারের পর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। আর গত রোববার সাবরিনাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও ডিসি অফিসে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার রোগীকে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের নমুনা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট’র (আইইডিসিআর) মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০টি প্রতিবেদন তৈরি করা হয় জেকেজি কর্মীদের ল্যাপটপে। যার মাধ্যমে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও প্রতিটি পরীক্ষার জন্য নেয়া হতো সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে ১০০ ডলার।

এমএস/এসি