ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যেসব ব্যায়াম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:০৮ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২০ শনিবার

দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। অনিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবস্থাই মূলত এর জন্য দায়ী। এই রোগের রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট ও ওষুধের সঙ্গে সমান জরুরি নিয়মিত ব্যায়াম। কিন্তু যে কোনও সময়ে নয়। তার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে ইনসুলিনের কাজ ব্যাহত হয়। তখন রক্তে শর্করার পরিমাণ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তাই চর্বি ঝরানোর জন্য কার্ডিয়োভাস্কুলার এক্সারসাইজ করতে হবে। আর কখন ব্যায়াম করছেন, সেটাও জরুরি। অনেকেই ঘুম থেকে উঠে দৌড়তে চলে যান। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের মর্নিং ওয়াক বা খালিপেটে দৌড়ানো উচিত নয়। 

ব্লাড সুগার পরীক্ষায় সব সময়ে ফাস্টিংয়ের চেয়ে পিপি’র রিপোর্টে সুগার লেভেল বেশি আসে। কারণ, খাবার খাওয়ার পরে তার শর্করা শরীর কত তাড়াতাড়ি ভাঙতে পারছে এবং রক্তে পৌঁছচ্ছে, তার উপরেই শরীরের সুস্থতা নির্ভরশীল। তাই কিছু খেয়ে ব্যায়াম শুরু করুন, খালি পেটে নয়। বিকেলে হাঁটতে পারেন। ব্রেকফাস্টের কিছুক্ষণ পরে শুরু করা যায় ব্যায়াম।

এমন ব্যায়াম করতে হবে যাতে ঘাম ঝরবে। তবেই লাভ হবে। সাধারণত সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করার কথা বলা হয়। সপ্তাহে সাত দিনে ভাগ করলে প্রত্যেক দিন ২০-২৫ মিনিট। তবে ডায়াবেটিসের ধরন ও ব্লাড সুগারের মাত্রার উপরে সময়ের ওঠানামা করে। তবে যেসব ব্যায়ামে উপকার পাবেন, এবার তা জেনে নিন ...

কার্ডিয়ো ব্যায়াম 

লাইট জগিং: বাড়ির ছাদে বা সামনে মাঠ থাকলে সেখানে কম গতিতে বেশিক্ষণ ধরে লাইট জগিং করতে পারেন।

সাঁতার: এর কোনও জুড়ি নেই। যদিও এখন বেশির ভাগ সুইমিং পুলই বন্ধ। তবুও বাড়িতে সাঁতারের ব্যবস্থা থাকলে দিনে আধ ঘণ্টা সাঁতার কাটতে পারেন।

দৌড়: করোনাকালে খোলা ছাদে মিনিট কুড়ি দৌড়ালেও ভাল কাজ হয়। অথবা খালি কোন মাঠ পেলে সেখানেও দৌড়াতে পারেন।

স্পট জগিং: বাড়ি থেকে বেরুনোর উপায় না থাকলে বাড়ির মধ্যে স্পট জগ করে নিতে পারেন।

খেলার মাধ্যমে: ব্যায়াম করতে ভাল না লাগলে টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের মতো খেলা বেছে নিতে পারেন। এতেও কিন্তু ভালই ঘাম ঝরবে।

যোগব্যায়ামও উপকারী

ডায়াবেটিসের জন্য শরীরের স্ট্রেস হরমোনও সমান দায়ী। তাই হতাশা, ক্লান্তি কাটাতে মন শান্ত রাখা প্রয়োজন। ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম করতে পারেন। প্রাণায়াম, কপালভাতির মাধ্যমে অনেকটাই স্ট্রেস কেটে যায়। মেডিটেশন ও সূর্যপ্রণাম করলেও উপকার পাবেন।

ষাটোর্ধ্ব ও হাঁটুর সমস্যায়

বয়সের কাটা পঞ্চাশের দিকে এগোলেই খাবারে রাশ টানা ও ব্যায়ামের রশি ধরার সময় শুরু। একটা বয়সের পরে হাঁটুর সমস্যা শুরু হয়। তার সঙ্গেই বয়সজনিত কারণে অনেকেরই গতিবিধি ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসে। এই শারীরিক অক্ষমতার কারণে, হাঁটুর ব্যথার জন্য অনেকেই দৌড়নো, জগিং ইত্যাদি ভারী কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ করতে পারেন না। তখন কিন্তু খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আর ভরসা রাখতে হবে ওষুধে। তবে হাঁটাচলা ও যোগব্যায়াম জারি রাখুন। মন শান্ত থাকলে স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রিত থাকে। 

চিকিৎসকদের মতে ‘‘কোনও ডায়াবেটিক রোগীর ইনসুলিন বা ওষুধ চলছে। ফলে রক্তে তার গ্লুকোজ লেভেল স্বাভাবিকের কাছাকাছিই রয়েছে। রোগী সেটা না বুঝতে খালি পেটে খুব ভারী ব্যায়াম করতে গেলেন। এতে কিন্তু ব্লাড সুগার লেভেল হুট করে অনেকটা নেমে গিয়ে রোগীর শরীরে ক্ষতি করতে পারে। তাই ইনসুলিন বা নিয়মিত ওষুধ চললে আরও সচেতন হতে হবে। ব্যায়ামের আগে অবশ্যই হালকা কিছু খেয়ে নিতে হবে। নিয়মিত ব্লাড সুগার পরীক্ষা করাও জরুরি।”

সূত্র: আনন্দবাজার

এএইচ/এমবি