কেন কুমড়ার বীজ খাবেন জানেন?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৪৫ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২০ শনিবার
করোনাকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। বেশি করে শাকসব্জি খেতে বলছেন তাঁরা। তবে সবজি খেলেও এর বীজ সাধারণত আমরা ফেলে দেই। কিন্তু এর মধ্যে এমন কিছু সবজি রয়েছে, যার বীজ শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। পুষ্টিবিদরাও বলছেন, ওই বীজ ডায়েটে থাকলে তা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।
মিষ্টি কুমড়া হয়তো অনেকেই খান, তবে কেউ কেউ এই সবজিটি পছন্দ করেন না। পুষ্টিবিদদের মতে, কুমড়া বীজ এই সবজির অন্যতম উপাদান। কুমড়ার বীজে রয়েছে শরীরের অপরিহার্য ফ্যাট। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস হলো কুমড়ার বীজ। শরীরে নিজে থেকে এটি তৈরি হয় না। খাবারের মাধ্যমে এটি শরীরে যায়। তাই খেয়াল রাখতে হবে সে দিকে।
কুমড়ার বীজ কেন রাখবেন খাবারে, তার বিস্তারি জেনে নিন...
* রোজ অল্প কয়েকটা কুমড়ার বীজ খেতে পারলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন সমৃদ্ধ এই বীজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রদাহ কমাতে এবং ওবেসিটি বা স্থূলত্ব এড়াতেও সাহায্য করে।
* কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে। মাত্র ১০০ গ্রাম বীজে থাকে ১৮ গ্রাম ফাইবার। এটি একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার ৭২ শতাংশই পূরণ করতে সক্ষম। এর ফাইবার কোলনের ভাল ব্যাক্টিরিয়ার জোগান দেয়। ‘মাইক্রোবিয়াল ব্যালান্স’ বা অণুজীবের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্রনিক রোগেরও উপশম করে এই বীজ।
* ভাল কোলেস্টেরল এইচডিএল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল- এই দুই ধরনের কোলেস্টেরলই তৈরি হয় লিভারে। এলডিএল ধমনীর প্রাচীরে তৈরি হওয়ায় ব্লকেজ তৈরি হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে এইচডিএল খারাপ কোলেস্টেরল সরিয়ে রিসাইকেলে সাহায্য করে। কুমড়ার বীজ এই দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা করে।
* পিইউএফএ এবং লিপোফিলিকের মতো অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার কারণে এই বীজ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকার কারণে ফ্রি র্যাডিক্যাল ধ্বংস করে এই বীজ। চিকিৎসকদের মতে, কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট থাকে, তাই এটি রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। বিশেষ করে বর্ষার সময় ঠাণ্ডা লাগা, ফ্লু, ক্লান্ত হয়ে পড়া, এই সমস্যাগুলোর হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় কুমড়ার বীজ খেলে।
* কুমড়ার বীজে থাকে সেরোটনিন, এই উপাদানটি প্রাকৃতিকভাবে ঘুমের ওষুধ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওষুধের পরিবর্তে এটি খেতে পারেন। এ ছাড়াও আর্থারাইটিসের ব্যথায় এই বীজের তেল মালিশ করলে খানিকটা উপশমও মেলে।
* কুমড়ার বীজে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকার কারণে সেটি প্রস্টেটের সমস্যাকে দূরে রাখে। ইনসুলিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রয়েছে এই বীজের। কারণ এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
* কুমড়োর বীজে রয়েছে কিউকারবিটিন, এ ছাড়া ভিটামিন সি থাকার কারণে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এটি।
কী ভাবে খাবেন এই বীজ?
পুষ্টিবিদরা বলেন, কম ক্যালরি, ভরপুর পুষ্টিতে ভরা কুমড়ার বীজ ফেলে দেবেন না। বরং এই বীজ বেটে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন কাঁচা স্যালাডে কিংবা সুপেও। বীজ অল্প সেঁকে স্ন্যাক্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে সব থেকে বেশি ভাল।
এএইচ/এসি