বন্যায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩০ এএম, ১৯ জুলাই ২০২০ রবিবার
উত্তরাঞ্চলে নদনদীর পানি কমছে। বাড়ছে মধ্যাঞ্চলে। বিভিন্ন স্থানে পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। দুর্গত এলাকায় খাদ্য, জ্বালানি ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। বন্যার্তদের মাঝে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রামে ধরলা-ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমতে শুরু করলেও বানভাসিদের মাঝে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ঘরে ঘরে দেখা দিয়ে শুকনা খাবার, গো-খাদ্যের সংকট। কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্গম চরাঞ্চলে সাড়ে ৫ শতাধিক বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
পর পর দুই দফা বন্যায় বিপাকে পড়েছে গাইবান্ধার গরু পালনকারীরা। বন্যার পানি দীর্ঘদিন থাকায় গবাদী পশুর খাদ্য যোগানসহ গরুর উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারছেন না তারা। গাইবান্ধায় একমাস যাবৎ বন্যার পানি স্থায়ী হওয়ায় ডুবে গেছে গাইবান্ধার ৪ উপজেলার ১শ ৬৫ টি চরাঞ্চল। এতে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত দেড় লক্ষাধিক মানুষ।
দ্বিতীয় দফা যমুনায় সামান্য কিছুটা পানি কমলেও সিরাজগঞ্জে বানভাসী মানুষের মাঝে বেড়েছে দুর্ভোগ। বন্যার্ত প্রায় আড়াই লাখ মানুষের ঘর-বাড়িতে পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যের অভাব।
টাঙ্গাইলে যমুনাসহ সকল নদীর পানি কিছুটা কমলেও জেলার আরো নতুন এলাকা বন্যা কবলিত। ছোনকা পাড়া ব্রিজ বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ায় বাসাইল উপজেলা সদর থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন সড়কটি বন্ধ রয়েছে। এদিকে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি কিছুটা কমেছে।
জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। ৭ উপজেলায় ৫২ ইউনিয়নের ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলায় রেল লাইনের উপর পানি উঠায় জামালপুরের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে শেরপুরের ৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি, পাট, আউশ-আমন বীজতলা, সবজী ক্ষেত সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। প্লাবিত এলাকার প্রায় ৩০ হাজার লোক বিভিন্ন স্কুল ও বন্যা আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
হবিগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার চারটি উপজেলার ফসলি মাঠ, গ্রামীণ সড়কসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তা বানের পানিতে তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বানিয়াচ-আজমিরীগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ।
সিলেটে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার নিচে চলে এলেও নিম্নাঞ্চলের পানি কমছে না। দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যার্তদের মধ্যে। এখনো সিলেট জেলা ২০ টি ইউনিয়নের বেশির এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
সুনামগঞ্জে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর দুই বার বন্যার কারণে এসব এলাকার ৬০০ কিলোমিটার সড়ক ভেঙ্গে পড়েছে অর্ধশতাধিক সেতু ও কালর্ভাটের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জেলার ২২ টি সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রাজবাড়ীতে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে পদ্মার পানি। গবাদি পশুর খাবার ও বাসস্থান সংকট দেখা দিয়েছে চরমে। প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ বন্যার পানিতে অসহায় জীবন যাপন করছে।
পদ্মার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে দেশের মধ্যাঞ্চলীয় জেলা শরীয়তপুরে। শরীয়তপুর সদরসহ নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার অর্ধশত গ্রামে বন্যার পানি ঢুকেছে। গবাদিপশুর খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে।
এমবি//