মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কিশোরীদের জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ (ভিডিও)
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ২১ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:১৪ পিএম, ২১ জুলাই ২০২০ মঙ্গলবার
মুজিববর্ষ উপলক্ষে কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যতিক্রম এক উদ্যোগ নিয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। জেলার ৩০৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় গড়ে তোলা হয়েছে ‘নন্দিনী হাইজিন কর্নার’। কিশোরী শিক্ষার্থীদের পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সেবায় এমন উদ্যোগ ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
জানা গেছে গত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত জেলার সমস্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ‘সার্ভে অন পারসোনাল মিনস্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক এক জরিপ চালায় বরগুনা জেলা প্রশাসন।
জরিপের তথ্যমতে, পিরিয়ডের কারণে প্রতি মাসে বরগুনার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৪ শতাংশ ও মাদরাসার ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে অনুপস্থিত থাকে। এছাড়াও সচেতনতার অভাব ও আর্থিক অনটনে প্যাডের পরিবর্তে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮১ শতাংশ ও দাখিল মাদরাসার ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পুরনো কাপড় ব্যবহার করে।
এমন অবস্থায় বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তুলতে নন্দিনী হাইজিন কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নেয় প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। গড়ে তোলেন প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় নন্দিনী হাইজিন কর্নার।
যেখানে একটি বক্সে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্যানিটারি ন্যাপকিন, আয়রন ট্যাবলেটসহ পর্যাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম ওষুধ রাখা হয়। স্কুলছাত্রীরা বলছেন, ‘নন্দিনী হাইজিন কর্নার থাকায় তারা এখন নির্দিধায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে পারছেন।’
শিক্ষকরা বলছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিব্রতবোধ করত, পিরিয়ডকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকত। অভিভাবকদের কাছেও এরা সমস্যার কথা খুলে বলতে পারত না। এমন উদ্যোগের ফলে ছাত্রীদের অনুপস্থিতির হার শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।’
বরগুনা সদর উপজেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ এই কর্মসূচি সফলের কথা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুমা আক্তার।
আর জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘একটি সুস্থ শরীর নিয়ে সুস্থ মনের প্রজন্ম জাতিকে উপহার দিতেই এমন উদ্যোগে নেয়া হয়েছে।’
এই কর্মসূচির আওতায় মোট ১ হাজার ২২০ জনকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একজন ছাত্রী (নন্দিনী গার্ল), একজন ছাত্র (নোবেল বয়), একজন নারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে তারা বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এআই//এমবি