অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের নেপথ্যে যে মহিলা বিজ্ঞানী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২০ শনিবার
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। একটাই লক্ষ্য এই বিশ্বকে করোনামুক্ত করতে। এই লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন চারটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা। তারমধ্যে
অন্যতম হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এদের চ্যাডক্স১ এনকভ-১৯ নামের ভ্যাকসিনটি সবচেয়ে আগে আসার তালিকায় রয়েছে। এই ভ্যাকসিন যাতে দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছে যায় তার পেছনে কাজ করছেন একজন নারী। তিনি হলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ড: সারাহ গিলবার্ট।
করোনার থাবায় আজ পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৮৫ জন মানুষের। আর আক্রান্তের হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৪৫ জন। সংখ্যা এখনও ঊর্ধ্বমুখী। সেই
সংখ্যায় যতবার দেখেছেন এই মহিলা বিজ্ঞানী, ততবারই হার না মানা উদ্যোগ নিয়ে ভ্যাকসিন প্রস্তুতের লড়াইয়ে নিজের সব ভাবনা উজার করে দিচ্ছেন।
তিনি একাধারে বিখ্যাত বিজ্ঞানী, অন্যদিকে তিন সন্তানের জননীও। ঘর সামলে বিজ্ঞানের কাজে মনোনিবেশ করেন নিপুণ দক্ষতায়। খুব ভালো বাঁশিও বাজান ড: সারাহ গিলবার্ট।
গাড়ি নয়, সাইকেল চালিয়েই কর্মক্ষেত্রে যান তিনি। সারাহ গিলবার্ট বিশ্বের বিজ্ঞানমহলে খ্যাত একজন ‘ব্রিলিয়ান্ট ভ্যাকসিনোলজিস্ট’ হিসেবে। করোনার এই মুহূর্তে তাঁর তৈরি চ্যাডক্স
ভ্যাকসিনের দিকেই বিশ্বের দৃষ্টি।
বিশ্বের ভ্যাকসিনোলজিস্টদের মধ্যে অন্যতম হলেন ড: সারাহ গিলবার্ট। ব্রিটেনের বিখ্যাত ভ্যাকসিন রিসার্চ সেন্টার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনের ইনস্টিটিউটের
ভ্যাকসিনোলজিস্টের প্রফেসর তিনি। বিভিন্ন সংক্রামিত ব্যাধি এবং ক্যান্সরের বিরুদ্ধে ইমিউনোথেরাপি প্রোডাক্টও তৈরি করেছেন সারাহ গিলবার্ট।
প্রায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানবদেহে টি সেল-কে কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন সারাহ। ম্যালেরিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টিউবারকিউলোসিসের মতো
রোগের বিরুদ্ধে টি-সেলকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেই বিষয়টিও দেখিয়েছেন এই মহিলা বিজ্ঞানী। এছাড়া লাসসা, নিপাহ, মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের
বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন তৈরিতে তাঁর দক্ষতা বিশ্বের কাছে ফুটে উঠে।
প্রচার বিমুখ থাকতে চান বলেই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সাফল্যর খবর নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁকে। ১৭ বছর বয়সেই সারাহ ঠিক করে নেন তিনি মেডিকাল রিসার্চার হবেন।
এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। গ্র্যাডুয়েশন, পিএইচডি শেষ করে বায়োটেকনোলজির একাধিক সংস্থায় কাজ করেন। ডেলটা সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে শেখেন ওষুধ
তৈরির কাজ। এরপর ধীরে ধীরে চলে আসেন ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে। সংক্রামিত ব্যাধি থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর লক্ষ্যে এগিয়ে চলছেন ড: সারাহ গিলবার্ট।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ভ্যাকসিনের প্রাথমিক ক্লিনিকাল ট্রায়াল কতটা সফল তা ২০ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে ল্যানসেট জার্নালে। সেই প্রতিবেদনের
লেখক সারাহ গিলবার্ট। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, “এই ভ্যাকসিনটি (ChAdOx1 nCoV-19) সুরক্ষার ক্ষেত্রে উপযোগী। যেমন প্রয়োজন সেই মতো দেহে অ্যান্টিবডিও তৈরি করতে
সক্ষম হচ্ছে। এর অর্থ হল মানবদেহে এই ভ্যাকসিন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে পুনরুদ্ধার করতে পারছে এবং এটি মানব শরীরের জন্য সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।”
এএইচ/এমবি