স্বামীর পরকীয়ার বলি হলো অঞ্জনা, ভাসমান লাশ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২০ শনিবার
অঞ্জনার মৃতদেহ নিয়ে স্বজনেরা (উপরে) ও অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ (নিচে)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে অঞ্জনা খাতুন (২৭) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া গ্রামে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী গাউস মিয়া পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৫ জুলাই) লাশ ময়নাতদন্তের পর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় অঞ্জনা। নিহত অঞ্জনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামের তজু মিয়ার মেয়ে। স্বামী গাউস মিয়া উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া গ্রামের ভাষান মিয়ার ছেলে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এবিএম মুসা চৌধুরী জানান, অতিরিক্তি বিষপানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছি। তবে তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের ভাই আদিল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, সাত বছর পূর্বে গাউসের সাথে বিয়ে হয় অঞ্জনার। বিয়ের পর থেকেই আমার বোনকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিলো গাউস। তাদের দুটি ছেলে সন্তান আছে। এর মাঝেও পাশের গ্রামের এক নারীর সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয় গাউস। পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অঞ্জনাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় গাউস।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন গত বুধবার সকালে গাউসের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে অঞ্জনাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। অঞ্জনার অবস্থার অবনতি দেখে মুখে বিষ ঢেলে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করেন গাউস। বিষয়টি আশপাশের লোকজন জানতে পেরে আমাদের বাড়িতে খবর দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় ব্রহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। পরের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আমার বোন।
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.কবির হোসেন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের অবহিত করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিক, উপজেলার কাষ্টি নদী থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির (৪৫) লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। শনিবার দুপুরে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কাষ্টি নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের কাষ্টি নদীতে পাট ক্ষেতের পাশে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে ভসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। তবে তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিলনা।
নাসিরনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির হোসেন জানান, নদীর স্রোতে এ লাশটি কোথাও থেকে ভেসে এসেছে বলে তাদের ধারণা। নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। খালি গায়ে লুঙ্গি পরা অবস্থায় ছিলো। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এনএস/