শতবছরে পদার্পন করলো মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বন
প্রকাশিত : ১০:০১ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৭ শনিবার
শতবছরে পদার্পন করলো মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম লাউয়াছড়া বন। ইতোমধ্যে দেশের অনেক বন কালের আবর্তে হারিয়ে গেলেও টিকে রয়েছে লাউয়াছড়া। এই বন একসময় এতই ঘন ছিল যে, সব জায়গায় সূর্যের আলো পৌঁছাতো না। তবে নানা প্রজাতির গাছ চুরি ও বিভিন্ন প্রানী মারা যাওয়ায় দিনদিন সংকুচিত হচ্ছে লাউয়াছড়ার পরিধি।
লাউয়াছড়া বনের আগের নাম ছিলো পশ্চিম ভানুগাছ রিজার্ভ ফরেস্ট। ১৯১৭ সালে তৎকালীন আসাম সরকার এই বনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে। পরে ১৯২৫ সালে বৃটিশ সরকার বনের ১২৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে সেগুন, চাপালিশ, জারুলসহ বেশ কিছু জাতের গাছ লাগায়। বৃষ্টি প্রবন এলাকা হওয়ায় দ্রুত বাড়তে থাকে বনের পরিধি ।
লাউয়াছড়া, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। সুন্দরবনের পরেই এর অবস্থান। বাংলাদেশের অবশিষ্ট চিরহরিৎ বনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই বন।
এই বনে আছে সেগুন, লোহাকাঠ, চাপালিশ, জারুল, গর্জন, ছাতিয়ান-সহ অসংখ্য মুল্যবান কাঠ গাছ। রয়েছে ১৬৭ প্রজাতির লতা ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর মধ্যে দুটি আফ্রিকান টিক ওক এশিয়ার মধ্যে শুধু লাউয়াছড়া বনেই দেখা মেলে। বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে উল্লুক লজ্জাবতী বানর, ক্যাপড। এখানে রয়েছে এক ধরনের বিশেষ জোঁক, তারা পরিবেশের সাথে মিশে নিজেদের রং পরিবর্তন করে। এ ছাড়াও রয়েছে পাহারী সোনালী কচ্ছপ।
বিভিন্ন প্রজাতির গাছ চুরি হয়ে যাওয়ায় দিনে দিনে সংকুচিত হচ্ছে লাউয়াছড়া বন। এছাড়া বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া রেললাইনে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে নানা প্রাণী।
এদিকে বন কর্মকর্তারা জানান, লাউয়াছড়ার গাছ ও প্রাণী রক্ষায় চেষ্টা চালা্েচ্ছন তারা।
শতবর্ষ নয়, লাউয়াছড়া বনকে আরও হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা--এমনটাই মনে করছেন সবাই।