তুরস্কের বিখ্যাত এক বিড়ালের গল্প
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:০১ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০২:০৩ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২০ সোমবার
দীর্ঘ প্রায় ৮৬ বছর পর জাদুঘর আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করেছে তুরস্ক। সম্প্রতি দেশটির প্রশাসনিক আদালতের এক রায়ের পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এ ঘোষণা দেন।
গত ১১ জুলাই, শুক্রবার ৯ দশক পর আয়া সোফিয়ায় পবিত্র আজানের ধ্বনি শুনেছে মুসলিম জাহান। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছে জুমার নামাজের দৃশ্য।
তবে সেই প্রসঙ্গে আজ নয়, আজ কথা হবে তুরস্কের ঐতিহাসিক স্থাপনা আয়া সোফিয়ার গ্লি নামের একটি বিড়ালকে নিয়ে। গ্লি- বেশ জনপ্রিয় একটি বিড়াল। সে নানা কারণে বিখ্যাত। তবে সম্প্রতি আয়া সোফিয়া মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে উঠে আসে গ্লি।
কী ঘটবে এ প্রাণীটির ভাগ্যে? তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স তুরস্কের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানায়, আয়া সোফিয়াতেই থাকবে বিড়ালটি। আয়া সোফিয়া মিউজিয়াম থাকার সময় দর্শনার্থীদের প্রিয় হয়ে উঠে ধূসর রঙের শরীর ও সবুজ জ্বলজ্বলে চোখের গ্লি।
২০০৯ সালে এক সফরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিড়ালটির সঙ্গে ছবি তোলেন। এরপরে গ্লি আরো বেশি বিখ্যাত হয়ে উঠে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, গ্লিসহ যেসব বিড়াল এ জায়গাটিতে আছে, তারা এখানেই থাকবে।
তিনি বলেন, এই বিড়ালটি অনেক বিখ্যাত হয়ে গেছে। এখানে আরো বিড়াল আছে, তবে সেগুলো এতটা বিখ্যাত নয়। এই বিড়ালটি তো থাকছেই, অন্য বিড়ালগুলোও আমাদের মসজিদে থাকতে পারবে।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় গ্লি। তার নামে ইনস্টাগ্রামে একটি অ্যাকাউন্টও আছে। উমুত বাহচেচির নামে এক ব্যক্তি চার বছর ধরে সেই অ্যাকাউন্টটি চালান।
ইনস্টাগ্রামে গ্লির আছে প্রায় ৫০ হাজার ফলোয়ার। অ্যাকাউন্টটিতে বিড়ালটিতে ছবি পোস্ট করা হয়ে থাকে। দর্শনার্থীরাও তাদের তোলা ছবি ট্যাগ করেন।
উমুত বলেন, আমি যখনই আয়া সোফিয়ায় যেতাম তখনই গ্লিকে দেখতাম। সে মডেলের মতো পোজ দিতো। মানুষ আমাকে লিখতো, গ্লি তোমাকে দেখতে ইস্তানবুলে আসবো। খুব ভালো লাগতো।
উল্লেখ্য, ১৯৩৪ সালের এক ডিক্রি অবৈধ ঘোষণা করা আয়া সোফিয়াকে এবছর ১১ জুলাই ফের মসজিদে রূপান্তরের পক্ষে রায় দেয় আদালত। প্রশাসনিক আদালত থেকে রায় পাওয়ার এক ঘণ্টা পর নতুন ডিক্রি জারি করেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান।\
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিপতি সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের নির্দেশে ষষ্ঠ শতাব্দীতে আয়া সোফিয়া নির্মিত হয়। ওই সময় এটিই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গির্জা।
এরপর ১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল ওসমানী খেলাফতের দখলে গেলে একে মসজিদে পরিণত করেন বিজেতা সুলতান মাহমুদ ফাতিহ। ওসমানী খেলাফতের বিলুপ্তি হলে ১৯৩৪ সালে মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক স্বাক্ষরিত এক ডিক্রিতে মসজিদটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়। এটি এখন ইউনেস্কো ঘোষিত একটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান।
এদিকে নামাজের সময় মসজিদটির ভেতরে থাকা খ্রিস্টীয় চিহ্ন বিশেষ একটি লেজারের মাধ্যম ঢেকে দেওয়া হবে বলে ক্ষমতাসীন এ কে পার্টির এক মুখপাত্র জানান।
ওমর সেলিক বলেন, জাদুঘরের ভিতর বহু জায়গায় ঐতিহাসিক চিহ্ন রয়েছে। সেগুলোকে আপাতত নামাজের সময় ঢেকে রাখা হবে।
তিনি জানান, নামাজের সময় ছাড়া অন্যান্য সময় দর্শনার্থীদের জন্য হায়া সোফিয়া খোলা থাকবে, ঐতিহাসিক চিহ্নগুলো উন্মুক্ত থাকবে। দর্শনার্থীরা বিনা খরচে এটি পরিদর্শন করতে পারবে।
এসএ/