ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বৃটিশ আমলের রাস্তাটি এখন এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ

বাউফল (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা 

প্রকাশিত : ০৬:৫৯ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২০ সোমবার

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের অন্যতম সুশিক্ষিত গ্রাম নুরাইনপাশা। বছরের পর বছর গ্রামটির বড় একটি অংশ বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। পরে বর্তমান সরকার প্রতিটি ঘরে আলো পৌঁছায়। কিন্তু, নুরাইনপাশার অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা। ফরে অল্প বৃষ্টিতেই হাটু পানি ও কাদা জমে। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। তাই, দাবি উঠেছে গ্রামের রাস্তাগুলো পাকাকরণের। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নুরাইনপাশা খেয়াঘাট থেকে মরহুম রত্তন আলী মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত সড়কটি বৃটিশ আমলের হলেও, এখন পর্যন্ত কাঁচা। বর্ষাকাল আসলেই কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এমনকি পায়ে হেটে চরারও কোন উপায় থাকে না। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের পড়তে বিপাকে। রাস্তায় কাদার অযুহাতে স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাদের।

নুরাইনপাশা গ্রামের আব্বাস উদ্দিন মিয়া বলেন, 'বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। দীর্ঘদিন আমাদের গ্রামে কারেন্ট ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যার সদিচ্ছায় আমরা এখন শতভাগ কারেন্টের আওতায়। আমাদের এখন আর কোন দাবি নেই, দাবি একটাই। সেটা হচ্ছে আমাদের অন্যতম প্রধান বৃটিশ আমলের রাস্তাটি যেন পাকা করা হয়। বর্ষার সিজনে হাটু সমান কাদার কারণে দুর্ভোগে পরতে হয় মসজিদের মুসল্লি, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ এই রাস্তায় যাদের নিয়মিত বাধ্য হয়ে চলতে হয় তাদের।'

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, নুরাইনপাশা খেয়াঘাট থেকে দক্ষিণ নুরাইনপাশা ও পশ্চিম নুরাইনপাশার বিভিন্ন সড়কে কাদা পানিতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

আরেক ভুক্তভোগী চান মিয়া বলেন, 'এ রাস্তাটি পাকা করলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হবে। এ রাস্তা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়ির অন্যতম প্রধান রাস্তা। রাস্তাটি পাকা হলে স্থানীয়রা ভালোভাবে মিয়া বাড়ির মসজিদে নামাজ পড়তে আসতে পারবে। বর্ষাকালে মসজিদে মুসল্লিরা কাদার কারণে আসতে পারে না।'

এলাকার মুরুব্বি ওয়াহাব মিয়া ও সত্তার মিয়া বলেন, 'নুরাইনপাশা খেয়াঘাট হতে রত্তন আলী মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত কাঁচা হওয়ায় এ সড়কটিতে একটু বৃষ্টি হলেই কাদা হয়ে যায়। ফলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। রাস্তাটির কোথাও হাটু সমান কাদাও লক্ষ্য করা গেছে। এতে এলাকাবাসীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। এমনকি কাদার ভয়ে অনেকে এলাকার মসজিদটিতে ঈদের নামাজ পর্যন্ত পড়তে আসে না। আমাদের দাবি ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নমুখী সরকার এই রাস্তাটির দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়াবহ দুর্ভোগ ও ভোগান্তি হতে রক্ষা করবে।'

এদিকে নুরাইনপাশা খেয়াঘাটের দোকানদার সেলিম খান বলেন, নুরাইনপাশা খেয়াঘাট থেকে জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান বাড়ি পর্যন্ত সড়কটিও কাদায় ভরপুর। এ রাস্তাটি কাচা হওয়ায় স্থানীয়দের দুর্ভোগের শেষ নেই।

গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ইয়াকুব ফকির বলেন, 'নুরাইনপাশা খেয়াঘাট থেকে দক্ষিণ নুরাইনপাশা হয়ে কুম্বোখালী পর্যন্ত পাকাকরণ করা অতীব জরুরি।'

এলাকাবাসীর দাবি, রাস্তাটি পাকা করে সরকার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।

এ ব্যাপারে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, 'এই রাস্তাসহ নুরাইনপাশা গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো পাকাকরণ করলে ছাত্র-ছাত্রীরা ভালোভাবে স্কুলে যেতে পারবে। স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘব হবে।'

এআই/আরকে/