ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

করোনায় কিছু মানুষের উপসর্গ দেখা যায় না, কেন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৩১ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২০ বৃহস্পতিবার

করোনা ভাইরাসে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু উপসর্গ নেই। এমন কথা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। বহু মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটছে। আবার নিজেদের অজান্তেই ঠিকও হয়ে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু কেন এটা হচ্ছে? কিছু মানুষের ক্ষেত্রে যেখানে করোনা প্রাণঘাতী আকার নিচ্ছে, সেখানে একই ভাইরাস কেন কোনও প্রভাব ফেলতে পারছে না কিছু মানুষের শরীরে?

কারণটা লুকিয়ে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তির মধ্যে। আমাদের শরীরে আগে থেকে সঞ্চিত যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, তাই এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালায়। সেখানে দেখা গিয়েছে, শরীরে মেমোরি টি-সেল নামক একটি বিশেষ কোষের উপস্থিতি করোনার হাত থেকে কিছু মানুষকে রক্ষা করছে।

এই সমীক্ষায় তিনটি আলাদা আলাদা দলের ওপরে পরীক্ষা চালানো হয়। প্রথম দলে ছিলেন ৩৬ জন মানুষ। এরা সবাই করোনার সংস্পর্শে এসেছেন এবং এদের শরীরে মেমোরি টি সেল রয়েছে। দ্বিতীয় দলে রয়েছে ২৩ জন মানুষ। এরা সবাই ২০০৩-এ সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং এদের শরীরেরও টি সেল মজুত আছে। তৃতীয় দলে ছিলেন ৩৭ জন, যারা কোনও দিন প্যাথোজেনের সংস্পর্শে আসেননি।

দেখা গিয়েছে আগে সার্সে আক্রান্ত হলেও নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। গবেষকদের একাংশ মনে করছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে একটা সময় বহু মানুষের শরীরে এর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাবে। যার ফলে করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে যাবে এবং এই সংক্রমণ নিজে থেকেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই পর্যায়কেই বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘হার্ড ইমিউনিটি’।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার এক অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষক বলেন, 'হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে এখনও বহু সময় লাগবে। কারণ, সেজন্য অন্তত ৫০-৬০ শতাংশ মানুষের শরীরে এই ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হতে হবে। তবেই আমরা প্রাকৃতিক উপায়ে এর ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পারব এবং এর শৃঙ্খল ভেঙে ফেলতে পারব। কিন্তু এর থেকে অনেক সহজ হবে টিকা আবিষ্কার করা। যাতে মানুষ অসুস্থ না হয়, কারও মৃত্যু না হয়। কারণ, প্রাকৃতিক উপায়ে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে হলে করোনা সংক্রমণের আরও একাধিক পর্যায় আসতে হবে। আরও বহু মানুষকে সংক্রমিত হতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আরও বহু মানুষের প্রাণও যাবে।'

এসি