ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

লাদাখের পর এবার উত্তরখণ্ড সীমান্তে চীনা সেনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৩ পিএম, ১ আগস্ট ২০২০ শনিবার

লাদাখের পর এ বার ড্রাগনের নজর উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ গিরিপথে। সম্প্রতি সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) একটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনারা। 

চীনের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার ওই গিরিপথ ভারত ও নেপালেরও সীমান্ত। এই পরিস্থতিতে এলাকায় সতর্ক নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা এবং ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। খবর আনন্দবাজারের। 

লিপুলেখের পরিস্থিতি কূটনৈতিকভাবে নয়াদিল্লির কাছে আরও স্পর্শকাতর। গত জুন মাসে নেপাল পার্লামেন্টে পাশ হওয়া মানচিত্র অনুমোদন বিলে উত্তরাখণ্ডের কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরার পাশাপাশি লিপুলেখ গিরিপথকেও ‘নেপালের ভূখণ্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

তবে বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লির আপত্তিতে কর্ণপাত করেননি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। এই পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে চীনা ফৌজের উপস্থিতি বিষয়টিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

ভারতীয় এক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লিপুলেখ গিরিপথের অদূরে প্রায় ১ হাজার চীনা সেনা শিবির গেড়ে বসেছে। সঙ্গে থাকা অস্ত্রশস্ত্র এবং রসদের পরিমাণ থেকে পরিষ্কার, যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েই তারা এসেছে। উত্তর সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাতেও সম্প্রতি চীনা ফৌজের তৎপরতা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিব্বতের কৈলাস ও মানস সরোবর যেতে তীর্থযাত্রীরা প্রাচীনকাল থেকেই লিপুলেখ গিরিপথ ব্যবহার করেন। প্রতি বছর জুন থেকে অক্টোবরে গিরিপথের ওপারে চীনা অধিকৃত তিব্বতের গ্রামগুলোর বাসিন্দারা স্থানীয় পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে এখানে আসেন। 

তীর্থযাত্রীদের সুবিধার জন্য ধরচুলা থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার রাস্তা বানিয়েছে ভারত। মে মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সেই রাস্তা উদ্বোধন করার পরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল নেপাল। ওলি সরকারের এমন আচরণের পিছনে বেজিংয়ের উসকানি আছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।

গালওয়ান সংঘর্ষের দেড় মাস কেটে গেলেও লাদাখের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখনও সরেনি চীনা ফৌজ। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাও সেখানে শীতকালীন অবস্থানের প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সেনার জন্য শীতকালীন পোশাক এবং অতি উচ্চতায় ব্যবহারের উপযোগী স্নো-টেন্টের সন্ধানে আমেরিকা, রাশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে যোগাযোগ শুরু করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

যদিও ভারতে চীনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েদংয়ের দাবি, নয়াদিল্লির সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়ানোর কোনও অভিপ্রায় বেজিংয়ের নেই। চলতি সপ্তাহে তিনি দাবি করেছেন, সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পরে লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে ‘সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র প্রক্রিয়ার প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়েছে। 

যদিও ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব চীনা  রাষ্ট্রদূতের দাবি খারিজ করে বলেছেন, ‘সেনা পিছনোর কাজে সামান্য অগ্রগতি হয়েছে। এখনও কাজ শেষ হয়নি।’

এআই//এমবি