ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

পিনাক-৬ লঞ্চ ট্র্যাজেডির অর্ধযুগ : আজও মেলেনি ২১ লাশের পরিচয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৩ এএম, ৪ আগস্ট ২০২০ মঙ্গলবার

পিনাক-৬ ট্র্যাজেডির ছয় বছর পূর্তি আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে মাঝ পদ্মায় সলিল সমাধি হয় শতাধিক তাজা প্রাণের। মর্মান্তিক এ ঘটনার অর্ধযুগ পার হলেও ২১ জনের পরিচয় আজও মেলেনি।

দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট। ঈদের আনন্দ কাটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মস্থলে ফিরছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা। সেদিন সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। এমন বৈরী আবহাওয়ায় পদ্মা ছিল উত্তাল। এরই মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে লঞ্চগুলো উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। এদের একটি ছিল পিনাক-৬। সেদিন পদ্মা নদীর মাঝে আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের লঞ্চটি। এতে সলিল সমাধি হতে হয় শতাধিক যাত্রীর।

সরকারি হিসেবে এই দুর্ঘটনায় ৪৯ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। নিখোঁজ হন ৬৪ যাত্রী। পরে ভাটি অঞ্চল থেকে নিখোঁজদের মধ্যে ৩৯ জনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে শিবচরের পাচ্চর স্কুল মাঠে রাখা হয়। স্বজনরা পোশাকসহ নানা চিহ্ন দেখে ১৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত করে মরদেহ নিয়ে যান। তবে ২১ জনের কোনো স্বজন পাওয়া যায়নি। পরে সরকারের তরফে ওই ২১ জনের মরদেহ শিবচর পৌর কবরাস্থানে দাফন করা হয়।

১ থেকে ২১ পর্যন্ত একেকটি লাশের পরিচয় নম্বর দিয়ে দাফন করা হলেও গেল ৬ বছরে সেই পরিচয় সংখ্যাও মুছে গেছে কবর থেকে। কিন্তু আসল পরিচয় শনাক্ত হয়নি তাদের।

লঞ্চ দুর্ঘটনায় দুটি মামলা হয়। তবে ছয় বছরেও মামলা দুটির নেই তেমন কোনো অগ্রগতি। 

এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, তৎকালীন প্রশাসন পরিচয়হীন ২১ লাশের দেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণ করেন। ওই সময়ে নিখোঁজদের অনেক স্বজনের দেহ থেকে নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা করা হলেও মেলেনি। এতে অজ্ঞাতপরিচয়ে থেকে গেছে ২১ জনের মরদেহ।

তিনি বলেন, ঘটনাটি অনেক বছর আগের হলেও বিষয়টি সম্পর্কে বর্তমান প্রশাসনও অবগত। শুরুর দিকে অনেক স্বজন ডিএনএ নমুনা দিলেও এখন আর কেউ খোঁজও নেন না।

এদিকে ওই লঞ্চডুবির ঘটনায় দু’টি মামলা হলেও এখনও বিচার শেষ হয়নি। চার্জশিটভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি। পিনাক-৬ এর মালিক ও তার ছেলেসহ কয়েক আসামি গ্রেপ্তার হলেও তারা জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এসএ/