ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

রবীন্দ্রনাথ সব সময় আজকের মানুষ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫২ এএম, ৬ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার

আজ বাইশে শ্রাবণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৯তম প্রয়াণ দিবস। এ উপলক্ষে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন নির্দেশক, অভিনেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও রবীন্দ্রগবেষক আতাউর রহমান। বিশ্বকবির শিল্পযাত্রার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

এই রবীন্দ্রগবেষক জানান, করোনার কারণে এবারে সেভাবে কোনো আয়োজন হচ্ছে না। তবে অনলাইনে শিল্পকলা একাডেমিসহ আরও দু-একটি সংগঠনের আয়োজনে অংশ নেবেন তিনি। এই আয়োজনগুলোতে আলোচনার পাশাপাশি বিশ্বকবির লেখা কবিতা আবৃত্তি করবেন। পাশাপাশি রবিঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেও প্রতি বছর কবিতা লেখেন তিনি। কিছুদিন আগে নতুন একটি কবিতা লিখেছেন। সেটিও পাঠ করবেন আজ।

তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বকালের সর্বযুগের অত্যাধুনিক মানুষ। মোদ্দাকথা হলো, তিনি সব সময় আজকের মানুষ। তার মতো করে আমরা আধুনিকতাকে কোনো ক্ষেত্রেই স্পর্শ করতে পারিনি। কাব্যে, সংগীতে, প্রবন্ধে, গল্পে, উপন্যাসে, চিন্তাভাবনায় তিনি ছিলেন কালোত্তীর্ণ। নাট্য রচনায় রবীন্দ্রনাথ বিচিত্রানুসন্ধানী। তার গীতি ও নৃত্যনাটক, কাব্য ও গদ্যনাটক আমাদের নাট্যমঞ্চকে বর্ণচ্ছটাময় করে তুলেছে। আমার মুক্তি আলোয় আলোয়-এর মাধ্যমে তিনি সবসময় মুক্তির পথ খুঁজেছেন। এ মুক্তি সর্বজনীন। পাশ্চাত্যে শেক্সপিয়রের নাটকের অর্থ যেমন এখনও প্রাসঙ্গিক, তেমনি আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিটি নাটকেই রয়েছে সমসাময়িকতার প্রতিচ্ছবি। 

আতাউর রহমান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সভ্যতার বিলুপ্তি- এগুলো সব সময় নতুন মোড়কে সমাজে বিরাজ করে, রবীন্দ্রনাথ তা তার নাটকে দেখিয়েছেন। তিনি কেন আজকের মানুষ রক্তকরবী নাটক দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী ছিলেন। রক্তকরবী নাটকে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, শয়তানের কালো ছায়ার বিপরীতে আমি নন্দিনী চরিত্রটি তৈরি করেছি। নন্দিনীকে তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অচলায়তন নাটকেও তিনি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। রথের রশিতে তিনি দেখিয়েছেন কোনো সভ্যতা ও ক্ষমতা চিরকালীন নয়। বিসর্জন নাটকেও তিনি হত্যার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে মহত্তর হন। তিনি তার নাটকের মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকেন। তিনি শুধু আমাদের সম্পদ নন, গোটা পৃথিবীর সম্পদ।

তিনি বলেন, শহরের রবীন্দ্রচর্চা নিয়ে আমি হতাশ নই। তবে আমাদের সব সম্প্রচার মাধ্যমসহ গ্রামে-গঞ্জে রবীন্দ্রচর্চা অনেক বেশি হওয়া উচিত। গ্রামের মানুষ যেমন জারি ও সারি গান এবং আধ্যাত্মবোধের গান শোনেন, ঠিক তেমনি আমি নিশ্চিত যে, রবীন্দ্রনাথের বিশ্বনিয়ন্তা ও মানুষের প্রেমের প্রতি উৎসর্গকৃত গান গণমানুষের হৃদয় জয় করতে সমর্থ হবে। প্রত্যেক বাড়িতে রবীন্দ্রচর্চা হওয়া উচিত। কারণ পরিবারই হচ্ছে প্রত্যেক মানবসন্তানের প্রথম বিদ্যালয়। সে বিদ্যালয়ে প্রদীপ জ্বললে জীবন হবে সুন্দর ও অর্থপূর্ণ।
এসএ/