ভারতে একদিনেই ৬১ হাজার আক্রান্ত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৫০ এএম, ১০ আগস্ট ২০২০ সোমবার | আপডেট: ১০:৫৩ এএম, ১০ আগস্ট ২০২০ সোমবার
করোনার সংক্রমণ রোধে জীবানুনাশক স্প্রে দিচ্ছেন ভারতের স্বাস্থ্যকর্মীরা- ফাস্টপোস্ট
ভারতে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের হার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে রেকর্ড করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর এতে করেই সময় যত যাচ্ছে, আক্রান্ত ব্যক্তি ও লাশের সারি বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গসহ দশটি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ঐ বৈঠক হবে। নতুন সংক্রমণের হিসেবে এই দশটি রাজ্যই দেশে উদ্বেগের কারণ। সেই কারণেই এই ১০টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলাদা বৈঠক করবেন।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জরিপ সংস্থা ওয়াল্ডোমিটার আজ সোমবার সকালে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ হাজার ১২৭ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ২২ লাখ ১৪ হাজার ১৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। যার ষাট শতাংশই চার রাজ্যের (মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ)।
অন্যদিকে গত একদিনে প্রাণহানি ঘটেছে ১ হাজান ৭৮ জনের। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৪৬৬ জনের মৃত্যু হলো করোনায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩০ লাখের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সর্বাধিক সংক্রমণ ছড়িয়েছে মহারাষ্ট্রে। তারপরেই তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক এবং তেলেঙ্গানা। এদিকে বিশ্ব তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের পরে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ করোনাক্রান্ত দেশ হলো ভারত। আর প্রাণহানিতে পঞ্চম।
এদিকে মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৫ হাজারের বেশি। মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজার ৩৬৭ জন মানুষের। মৃতের সংখ্যায় রাজধানী দিল্লিকে পেছনে ফেলে দুইয়ে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। যেখানে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি ঘটেছে ৪ হাজার ৮০৮ জনের। আর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৯০ হাজার ২০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। তিনে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে করোনার শিকার ২ লাখ ১৭ হাজার ৪০ জন। তবে, প্রাণহানি কিছুটা কম এখানে। যার সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৯ জন। দিল্লিতে করোনার থাবায় প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৯৮ জনের। আর ভুক্তভোগীর সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে সেখানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে করোনার দাপট।
সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতে প্রথমদিকে সামাজিক দূরত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন লকডাউনের কড়াকড়ি নেই। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় বাজার-হাট, গণপরিবহনে বেড়েছে লোকের ভিড়। বেড়েছে একে অপরের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাও। তাই, প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা।
এদিকে ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ২৭৮ জন ভুক্তভোগী সুস্থ হয়েছেন। দেশটিতে বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৩৯৩ জন।
মঙ্গলবারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধপ্রদেশ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, বিহার, গুজরাত ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়েছে। সংক্রমণের হিসেবে দিল্লি প্রথম দশটি রাজ্যের মধ্যে থাকলেও তাদের এই গোষ্ঠীর মধ্যে রাখা হয়নি। কারণ দিল্লিতে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি। তার বদলে পঞ্জাবে নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। মৃত্যুর নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও মালদহের মতো জেলাগুলি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিন্তায় রেখেছে।
এমএস/এমবি