সিরিজ বোমা হামলা
ঝালকাঠিতে দুই আসামির দিন কাটছে কারাগারে
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৩৩ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২০ সোমবার | আপডেট: ১১:৩৩ এএম, ১৭ আগস্ট ২০২০ সোমবার
ঝালকাঠিতে ২০০৫ সালে আলোচিত জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা-মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি বর্তমানে কারাগারে দিন কাটাচ্ছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর বিচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) আদালত এ রায় দেন।
ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শেখ. মো. তোফায়েল হাসান সিরিজ বোমা হামলার দুই মামলার একটিতে আসামিদের বিস্ফোরক আইনের পৃথক দুটি ধারায় যাবজ্জীবন ও ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এ রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি বিকনা এলাকার মো. ইউনুস মল্লিকের ছেলে মো. জিয়াউর রহমান এবং বৈদারাপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে ফরিদ হোসেন আদালতে উপস্থিতি ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টায় পর পর পাঁচটি বোমার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঝালকাঠি শহর। একইসময় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত চত্বর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, আইনজীবী সমিতি, সদর উপজেলা পরিষদ চত্বর ও বিকনা টেম্পোস্ট্যান্ডসহ ৫টি স্থানে। এ ঘটনায় ঝালকাঠি থানার তৎকালীন ওসি মো. সোহরাব আলী বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করে আহত অবস্থায় আটক ফরিদ হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আসম মোস্তাফিজুর রহমান মনু জানায়, ‘২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ জেএমবির সদস্য ঝালকাঠির বিকনা গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান ও আহত অবস্থায় আটক রিকশাচালক ফরিদ হোসেনকে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের পর মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন আদালত।’
তিনি জানান, ‘১৭ আগস্ট বোমা হামলার ঘটনার আড়াই মাস পর ১৪ নভেম্বর দেশের ইতিহাসে প্রথম জেএমবির আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঝালকাঠির দুই বিচারক সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাড়ে নিহত হন। এ মামলায় ঝালকাঠির আদালতেই জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমানসহ সাত শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসির আদেশ হয়। ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দেশের বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। পরবর্তীতে এর প্রতিশোধ নিতে জেএমবি ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল মামলা পরিচালনাকারী তৎকালীন পিপি হায়দার হুসাইনকে গুলি করে হত্যা করে।’
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় দেশের ৬৩ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ৪৫০টি স্থানে প্রায় পাঁচশ বোমার বিস্ফোরণ ঘটান জঙ্গিরা। এই হামলায় নিহত হন দুজন এবং আহত হন দুই শতাধিক ব্যক্তি।
এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় ১৬১টি মামলা হয়। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালান জঙ্গিরা। এতে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাড়ে ও সোহেল আহম্মদ।
এআই/এমবি