ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

করোনাকালেও প্রাইভেট বাণিজ্য, শ্রেণি কক্ষে দুই শিক্ষকের সংসার

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৯:৪২ এএম, ২০ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার

শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকের বসবাস। পরিবারের সদস্যসহ দুই শিক্ষক কাটিয়ে দিলেন দীর্ঘ ছয় মাস। আর করোনায় স্কুল বন্ধ হলেও থামেনি তাদের প্রাইভেট কিংবা কোচিং ক্লাস।

ছাত্রছাত্রী ও অভিভাকের সমালোচনা আর ক্ষোভ থাকলেও পটুয়াখালীর বাউফলের ইন্দ্রকূল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রায় ছয়মাস অবস্থান নিয়ে নিয়মিত প্রাইভেট-কোচিং চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে মোসা. সামসুন্নাহার ও শাহরিয়া আক্তার শিখা নামে বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। 

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত একটি ফ্লোরে পুরো সংসারের আসবাবপত্র সাজিয়েছেন দুই শিক্ষক সামসুন্নাহার ও শাহরিয়া আক্তার। কোচিংয়ের জন্য রয়েছে তাদের পৃথক পৃথক কক্ষ। হেনস্থার ভয়ে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ কিংবা টু-শব্দটিও করতে রাজি হননি স্থানীয়রা কেউ। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান,  রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন ওই দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বসবাস করছেন। করোনাকালেও বহাল তবিয়তে কোচিং ও প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও কোনোই ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মহামারি করোনার লকডাউন উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট বাণিজ্য চালু থাকলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন অনেকটাই উদাসীন উল্লেখ করেন অভিভাবকরা।     

এ ব্যাপারে শিক্ষক সামসুন্নাহার ও শাহরিয়া আক্তার শিখা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, বিশেষ বিবেচনায় ওই বিদ্যালয় ভবনে আছেন। বিদ্যালয় খুললে চলে যাবেন। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির লোকজন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তে তারা ওই ভবনে বসবাস করছেন উল্লেখ করলেও করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ডেকে প্রাইভেট কোচিং করানোর বিষয়ে মুখ খুলেননি তারা। 

এ বিষয়ে স্থানীয় সূর্যমনি ইউপির চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অনুমতি দেয়নি। ওই দুই শিক্ষকের থাকার বিষয়ে আমার মতামত জানতে চাইলে আমি বলেছি, এই মুহূর্তে যদি ওই ভবনটি প্রয়োজনীয় না হয় সেক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে থাকলে আমার কোনো আপত্তি নেই।’  

এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিশেষ বিবেচনায় ওই দুই শিক্ষককে থাকতে দেয়া হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘এভাবে বসবাস কিংবা কোচিং করানোর কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে  দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এআই/ এসএ/