রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের হত্যার হুমকি দিয়েছিল জঙ্গিরা (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:২১ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের হত্যার হুমকি দিয়েছিল জঙ্গিরা। দেশি-বিদেশি বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠন তাদেরকে হত্যার হুমকি দিতো। এছাড়া নানা প্রলোভনতো ছিলই।
ঠিকঠাক মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন না করতে মোটা অংকের ঘুষও সেধেছেন আসামীদের কেউ কেউ। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কাজ রায় ঘোষণা পর্যন্ত নিয়ে আসার পথটি সহজ ছিল না।
মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ রেজাউর রহমান। সরকার আরও দু’জন আইনজীবীকেও নিয়োগ দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান জানান, এটা দীর্ঘ সময় লেগেছে, ২২৫ জন সাক্ষীর আমরা সাক্ষ্যগ্রহণ করেছি। আসামীপক্ষ থেকে তাদেরকে দীর্ঘ জেরা করেছেন। একটা পর্যায় গিয়ে সফল পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের সহায়তা করেন বেসরকারিভাবে নিযুক্ত ২৩ আইনজীবী। এদের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ। মামলা চলাকালে প্রায়শই হত্যার হুমকি পেতেন তারা।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী আইনজীবী ফারহানা রেজা বলেন, মুফতি হান্নান ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য আসামী। তো উনি বলেছিলেন যে, আর্চেস গ্রেনেড ক্ষেপন করেই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। সেই গ্রেডেনগুলো সবগুলো উনি ব্যবহার করে ফেলেননি। এখনও কিছু গ্রেডেন রয়ে গেছে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে সেগুলো হয়তো প্রয়োগ করতে পারেন আমাদের উপর।
আসামিদের পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠনের পক্ষ থেকেও হুমকি দেয়া হতো তাদের।
আইনজীবী ফারহানা রেজা বলেন, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোও করেছে, দেশীয় জঙ্গি সংগঠনগুলো তারাও করেছে। কিন্তু আমরা আমাদের অবস্থানে থেকে দৃঢ় থেকেছি।
হুমকির পাশাপাশি প্রলোভনও দেখাতেন আসামিরা। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এই আইনজীবীকে ঘুষ সেঁধেছিলেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী আইনজীবী মো. আকরাম উদ্দিন শ্যামল জানান, এর পক্ষে নিয়োজিত বিজ্ঞ আইনজীবী উনি একদিন আমাকে বলিলেন যে, বাবর সাহেব আপনার জন্য একটি উপহার রেখেছেন। আমি বলেছি, এটা কেন আমাকে উনি দেবেন, আপনি আমাকে এ ধরনের কথা আর বলবেন না। এর কিছুদিন পর তার পিএ ফোন করেছেন, বলে যে বাবর সাহেব আপনার জন্য একটা উপহার রেখেছে। আমি তৎক্ষণাত বলেদিলাম, খবরদার আমাকে ফার্দার ফোন দিবেন না। এইভাবেই আমাদেরকে পেশাগত দায়িত্ব থেকে স্থলন ঘটানোর জন্য নানাভাবেই চেষ্টা চালানো হয়েছে।
জঙ্গি নেতা শরীফ শাহেদুল আলমও অর্থের লোভ দেখিয়েছিলেন।
মো. আকরাম উদ্দিন শ্যামল আর বলেন, এই মামলা একজন আসামি শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল, তিনি একদিন আমাকে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, তার এক বড়ভাইর একটা মামলা করে দিতে হবে, আমাকে দশ লাখ টাকা ফি দিবে। প্রয়োজনে আরও টাকা দিবে। এটা আসলে ছিল একটা ফাঁদ। এখানে পা দিলেই এ মামলার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত তো হতোই এবং আমার নিজের পেশা ও এই মামলার বিচারপক্ষরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতো।
আইনজীবীরা বলছেন, মামলার রায় চূড়ান্তভাবে কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করবে।
এএইচ/এমবি