ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধক সাবান

প্রকাশিত : ০৬:০৬ পিএম, ২৫ এপ্রিল ২০১৭ মঙ্গলবার

‘মশা মারতে কামান দাগা’-বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। তবে মশা মারার জন্য কামান নয় বরং ভিন্ন এক উপায় নিয়ে হাজির হয়েছেন আফ্রিকার একজন রসায়নবিদ৷ ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রতিরোধক “ফাসো” নামক সাবান তৈরির চেষ্টা করছেন তিনি, যা লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হতে পারে৷

অ্যানোফিলিস নামক মশা ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে থাকে। সাধারণত সন্ধ্যার সময় শিকারের খোঁজে বের হয় এই অ্যানোফিলিস মশা। এই মশার কামড়ের মাধ্যমেই মানব দেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রবেশ করে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় দশ লাখ লোক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়৷ মশা এবং ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের অভিনব উপায় আবিষ্কারক তরুণ রসায়নবিদ জেরার নিয়নডিকো ২০২০ সালের মধ্যে এক লাখ ম্যালেরিয়া রোগীর জীবন বাঁচাতে চান ।

রসায়নবিদ জেরার নিয়নডিকো বলেন, ‘‘আফ্রিকায় দশকের পর দশক ধরে মানুষ ম্যালেরিয়ার মারা যাচ্ছে৷ এই রোগ অনেক সমস্যার জন্য দায়ী৷ এই সমস্যার সমাধান বের করতে আফ্রিকানদের কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ৷”

এটা সহজ কাজ নয় বলে স্বীকার করেন নিয়নডিকো৷ ম্যালেরিয়া বিরোধী কার্যক্রমে প্রতিবছর প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করা হলেও এটি পুরোপুরি নির্মূলের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সাবান নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।কারণ এটা এমন একটি পণ্য যা ঝুঁকি থাকা মানুষদের প্রতিদিনের জীবনে সহজেই সন্নিবেশ করা যায়৷ আফ্রিকার ৯৫ শতাংশ বাড়িতে সাবান ব্যবহার হয়, এমনকি দরিদ্রতম পরিবারেও৷``

ফাসো সাবান শুধু পরিষ্কারের জন্যই নয়, বরং এটির গন্ধও মশাকে দূরে সরিয়ে দেয়৷ প্রতিরোধের এই পন্থা তৈরিতে যে তেল ব্যবহার করা হয়েছে তা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ সম্ভব৷ রাতের বেলা মশারি মানুষকে মশা থেকে দূরে রাখলেও দিনে এবং সন্ধ্যার সময়, বিশেষ করে যখন মশারা আক্রমণাত্মক, তখন মানুষকে রক্ষার উপায় তেমন নেই৷

আফ্রিকার নির্মাণ শ্রমিক লুই নাতামা এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমি একজন নির্মাণ শ্রমিক এবং কাজের সময় তেমন প্রতিরোধক থাকে না৷ ফলে প্রায়ই মশা কামড়ে দেয় যা আমাকে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়৷``

মশা প্রতিরোধক ক্রিম এবং স্প্রেগুলো দামি এবং অধিকাংশক্ষেত্রেই তেমন কার্যকর নয়৷ আর ফাসো সাবানের দাম সাধারণ সাবানের চেয়ে বেশি হবে না এবং দিনের বেলায় প্রয়োজনের সময় সেটি সুরক্ষা দেবে৷ নিয়নডিকোর কথায়, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ছয় ঘণ্টা নিরাপত্তা দেয়া৷ আর তা সংক্রামক ঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে আনবে।”

সময় যত কম নষ্ট হবে, ততই মঙ্গল হবে বলেও মনে কারেন নিয়নডিকো। ম্যালেরিয়ার প্রতি দুই মিনিটে একটি শিশু ম্যালেরিয়ায় মারা যাচ্ছে৷