ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২২ ১৪৩১

নবাবগঞ্জে জলাবদ্ধতায় সীমাহীন দুর্ভোগ

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:১৬ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২০ রবিবার

সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে পুরো এলাকা তলিয়ে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বছরের প্রায় ৬ মাস পানিবন্দী হয়ে থাকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের ৬/৭ হাজার মানুষ। পানিই যেন নিত্যসঙ্গী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে।

প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে ঘরের বাইরে বের হতে হলে পানি মাড়িয়ে যেতে হয় তাদের। জলাবদ্ধতার কারণে রোগী পরিবহন থেকে শুরু করে মালামাল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অন্যদিকে পানিবাহিত রোগে ভুগছেন অনেকে।

এলাকাবাসী জানান, হাসনাবাদ এলাকায় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস অনেক আগে থেকেই। প্রবাসী এই এলাকাটির মানুষের জীবনযাত্রার মান আগে থেকেই বেশ উন্নত। তবে সেই তুলানায় উন্নয়ন হয়নি এলাকার রাস্তাঘাটের। বর্তমানে স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাপনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাস্তাঘাট। বেহাল অবস্থার কারণে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। 

অধিকাংশ রাস্তাঘাটা কাঁচা ও নিচু হওয়ায় বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে তলিয়ে থাকে। হাসনাবাদ জপমালা গীর্জার পাশ্ববর্তী এই এলাকাতেই রয়েছে মাদার মেরি ও সেন্ট জোসেফ নামে দুটি কিন্ডারগার্টেন, একটি ক্যাটারিং ট্রেনিং সেন্টারসহ রয়েছে অন্যান্য একাডেমিক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের রাস্তাগুলো পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ইচ্ছা থাকায় সত্ত্বেও অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে ভর্তিইচ্ছুকরা। বছরের মে মাস থেকে নভেম্বর এই ৬ মাস বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকে রাস্তাগুলো।

এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হলে ড্রেন নির্মাণের কথা বলে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। পরে আর কোন খবর থাকে না তাদের। এছাড়া নির্বাচন আসলে প্রার্থীরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাস দিলেও পরবর্তিতে আর দেখা যায় না জনপ্রতিনিধিদের। রাস্তা উঁচু কিংবা পয়ঃনিস্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করা হলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে প্রতিকার মিলবে বলে জানান তারা।

হাসনাবাদ  গ্রামের বাসিন্দা প্রণয় আনজুস বলেন, ‘শত শত পরিবারের বসবাস সত্ত্বেও জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তির জন্য এগিয়ে আসছে না কেউ। জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমাদের প্রাণের দাবি এই দুর্ভোগ থেকে আমাদের রক্ষা করুন।’
 
কালিপদ বিশ্বাস জানান, ‘জলাবদ্ধতার কারণে এখানকার বাসিন্দারা সপ্তাহে একদিন গীর্জায় যেতে পারছে না। এছাড়া দিনে একাধিকবার পানি পায়ে মাড়িয়ে যাওয়ায় পানিবাহিত রোগে ভুগছেন অনেকে।’

একই এলাকার এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমরা খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের অনেকে রোববার নামাজেও (গীর্জায় প্রার্থনায়) যেতে পারে না। আজও সকালে নামাজে যেতে নতুন পোশাক পড়ে ঘুরেছি, কিন্তু পানির কারণে যেতে পারিনি।’

স্থানীয় ক্যাটারিং ব্যবসায়ী বলেন, ‘এলাকাটি প্রধান সড়কের তুলনায় নিচু। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই আমরা প্রায় ৬/৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ি। অথচ পানি নিষ্কাষণের জন্য একটি ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তা অসম্পূর্ণ। ড্রেনের মুখটা বন্ধ থাকায় পানি বের হতে পারছে না। যাদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা তারাও কোন দায়িত্ব নিচ্ছেন না।’

এ ব্যাপারে বান্দুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হিল্লাল মিয়ার সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 
এআই/এসএ/