মৌলভীবাজারে অগ্নিকাণ্ডে বসতবাড়িসহ ১৬ দোকান পুড়ে ছাই
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩২ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৪:৩৪ পিএম, ২৪ আগস্ট ২০২০ সোমবার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আকস্মিকভাবে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে ১৬টি দোকানঘর ও ১টি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাম্প নষ্ট থাকায় অগ্নিকান্ডে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন।
সোমবার ভোর ৫টায় মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ঠাকুর বাজারে একটি মুদি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আসে পাশের দোকানে ও একটি বসতগৃহে।
আগুন দেখে বাসুদেবপুর মসজিদের মোয়াজ্জিন আরজু মিয়া মসজিদের মাইকে এলাউন্স করে বিষয়টি এলাকাবাসীকে অবহিত করেন। এলাকাবাসী এসে কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে কয়েকদফা ফোন করলে কেউ ফোন রিসিভ হয়নি। পরে স্থানীয় শুকুর মোল্লা নামে একব্যাক্তি ফায়ার ষ্টেশনে জানালে, অগ্নি নির্বাপক দল ঘটনাস্থলে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় আধাঘন্টা অতিবাহিত করেও পানির পাম্প চালু করতে না পারায় আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। আরও প্রায় এক ঘন্টা পর পার্শ্ববর্তী উপজেলা শ্রীমঙ্গল থেকে অগ্নি নির্বাপক দলের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানান, সুব্রত দেব রায় নামে এক গণমাধ্যমকর্মী।তবে ততক্ষণে অগ্নিকান্ডে নান্নু স্টোর, দেওয়ান চালের দোকান, সাহবাগ ধানের দোকান, মামনি কনফেকশনারি, শাহজালাল ভেরাটিজ স্টোর, কে এম মেডিকেল হল, জননী মেডিকেল সেন্টার, মহিউদ্দিন কম্পিউটার, হাসিম টি স্টল, নকুল সেলুন, মকসন স্টোর, বাছির ফার্নিচার, মহসিন ভেরাইটিজ স্টোর, জুয়েল মিয়া’র বসত বাড়ি, চন্দন সেলুন, হাফিজ ভেরাইটিজ স্টোর ও নজরুল মিয়ার গুদাম ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় উল্লেখিত দোকানের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।
ঠাকুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো.জইনউদ্দিন, ব্যবসায়ী মো: সালাউদ্দিন, রফিক মিয়া, আব্দুল্লা মিয়া জানান, কমলগঞ্জ নির্বাপক দলের এমন গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে উপস্থিত জনতা। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণের পর দীর্ঘসময় কমলগঞ্জ অগ্নি নির্বাপক দলের গাড়ি আটকে রাখে। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক এর আশ্বাসে সাংবাদিক সুব্রত দেবরায় সঞ্জয় ও কমলগঞ্জ থানা পুলিশের এর মধ্যস্থতায় অগ্নি নির্বাপক দলের গাড়িটিকে ছেড়ে দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন জানান, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে এসে প্রায় একঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছি। আমাদের আরও কিছুক্ষণ জানালে আগুনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো কমানো যেত। তিনি জানান, কমলগঞ্জের পাম্পের ভিতরে কাঁদা প্রবেশ করায় প্রথমে পানি আসেনি। পরে তা পরিস্কার করার পর শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ দুই ইউনিট মিলেই আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন।
কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার আব্দুল কাদির জানান, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের পানি পাম্পটি নষ্ট হওয়ায় কাজ করতে বিলম্ব হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশেকুল হক জানান, ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে এই অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে এটি তদন্তক্রমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যতাযত বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সময় তিনি আরো জানান, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্থরা যাতে যতাযত ক্ষতিপূরণ পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।
আগুনের সূত্রপাত ও ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
কেআই//