ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

আইয়ুব বাচ্চুর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে কার্যক্রম চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২২ এএম, ২৫ আগস্ট ২০২০ মঙ্গলবার

আইয়ুব বাচ্চুর কোনো সৃষ্টিকর্ম নিয়ে কার্যক্রম চালানো সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানিয়েছে শিল্পীর দুই সন্তান ফাইরুয সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাযওয়ার আইয়ুব। এখন থেকে ‘এলআরবি’ নামের কোনো কার্যক্রম চালানো যাবে না। তার একক ভাবে রচিত, সুরারোপিত ও নিজ কণ্ঠে পরিবেশিত ২৭ টি এ্যালবামের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে কার্যক্রম চালানো কপিরাইট আইন লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইয়ুব বাচ্চুর দুই সন্তান এ তথ্য জানিয়েছেন।

ফাইরুয সাফরা আইয়ুব ও আহনাফ তাযওয়ার আইয়ুব বলেন, একজন শিল্পী এবং তাঁর সংগীতের স্রষ্টা হিসাবে আমার বাবুই তাঁর সৃষ্টিকর্মগুলো দীর্ঘকাল আগেই কপিরাইট করবার জন্য উদ্যোগী হন। বিভিন্ন চড়াইউতরাই পার হয়ে তিনি তাঁর গানের পুরো তালিকা কপিরাইট নিবন্ধিত করবার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিলেন। আইনিভাবে এগিয়ে যাওয়া এবং শিল্পীদের অধিকার এবং মালিকানা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রতি বাবুই সর্বদা লড়াই করেছে। 

তারা বলেন, তাঁর অকাল মৃত্যুতে আমরা পরিবার হিসাবে তার লক্ষ্য পূরণে তাঁর অসম্পূর্ণ স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। নানা প্রতিকূলতার পরেও আমি এবং আমার ভাই এখন বাবুইয়ের অসমাপ্ত কাজ সুন্দর ভাবে শেষ করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং তাঁর অসম্পূর্ণ যাত্রাটি শেষ করা এবং কেউ যাতে তার সৃষ্টিকর্মর মালিকানার অপব্যবহারের সুযোগ খুঁজে না পায় এটা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের মুল লক্ষ্য।

আইয়ুব বাচ্চুর সন্তানরা বলেন, এলআরবি নামে ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ আমার বাবুই আইয়ুব বাচ্চু সম্পূর্ণ একক ভাবে নেন। তাই তিনি একক ভাবে তার রচিত, সুরারোপিত ও নিজ কণ্ঠে পরিবেশিত ২৭ টি এ্যালবামের সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট করবার পাশাপাশি ‘এলআরবি’  নাম সম্বলিত লোগো এবং ব্যান্ডটিও তার নামে নিবন্ধিত করেছিল। রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও তার রচিত, সুরারোপিত ও স্বকণ্ঠে পরিবেশিত আরও অসংখ্য গান রয়েছে, যেগুলো কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রক্রিয়াধীন। তার অকাল মৃত্যুর পর সন্তান হিসেবে আমরা তার বৈধ স্বত্বাধিকারী। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেছি যে, বিভিন্ন ব্যক্তি বিচ্ছিন্নভাবে আমাদের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ না করেই তার রচিত, সুরারোপিত ও নিজ কণ্ঠে পরিবেশিত গানগুলো কোন স্ট্যান্ডার্ড বজায় না রেখে যেনতেনভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে গাইছেন, এমনকি বাণিজ্যিকভাবেও ব্যবহার করছেন। যা বাংলাদেশ কপিরাইট আইন লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য।

তারা আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য বাবুইয়ের সৃষ্টিকর্মের আইনি মালিকানার ক্ষেত্রে যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়যুক্ত হওয়া। তাই এখন থেকে আমাদের সম্মতি ব্যতিরেকে এলআরবি নামের অপব্যবহার করে আইয়ুব বাচ্চুর কপিরাইট রেজিস্টিকৃত গানগুলো পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হলো। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন ও দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফাইরুয সাফরা ও আহনাফ তাযওয়ার বলেন, বাবুই সর্বদা বিশ্বাস করতেন যে তাঁর ভক্তরা তাঁর অক্সিজেন এবং তাদের কারণে তিনি বেঁচে ছিলেন, বেঁচে থাকবেন। তার সন্তান হিসেবে আমরাও তাঁর ভক্তদের আশ্বস্ত করতে চাই, বাবুই তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের মাঝে যেভাবে ছিলেন সেভাবেই যেন থাকেন সেটাই আমরা শতভাগ নিশ্চিত করব। আইয়ুব বাচ্চুর ভক্তদের কাছে একটাই চাওয়া, এই মুহূর্তে তার সৃষ্টিকর্মের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একটু সময় দিন। আমরা বাবা হারিয়েছি, কিন্তু আইয়ুব বাচ্চুকে আপনারা কোনোদিন হারাবেন না, তিনি আপনাদেরই থাকবেন। অনন্তকাল। এক জন্মহীন নক্ষত্র হয়ে।

বাংলা ব্যান্ডের কিংবদন্তিত্যুল্য সঙ্গীতজ্ঞ আইয়ুব বাচ্চু ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর মারা যান।  ৯০ এর দশকের শুরুতে তিনি তাঁর নিজের ব্যান্ড এলআরবি প্রতিষ্ঠা করেন।

এসি