ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০টি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৯:৫৪ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২০ বুধবার

ঠাকুরগাঁও জেলার বাণীশংকৈলে টেন্ডারের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের যৌথ আন্তরিকতা এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের অভিজ্ঞ বিচক্ষনতার মধ্যে দিয়ে নিয়মনুযায়ী ৩০ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবনের রং এর কাজের পর ভবনগুলো চকচকে ঝকঝকে করে রাখা হয়েছে। এখন শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা।

কোভিড-১৯ এর কারণে সরকারী নির্দেশে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা এলেই ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের মধ্যে সদ্য নির্মিত ৩০টি নতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় একাডেমিক ভবনে ক্লাস করবে কোমলমতি শিশুরা। 

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জানায়, গত অর্থ বছরে এলজিইডির অধীনে মোট ২০ কোটি ৬৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭২টাকা টেন্ডার চুক্তির মাধ্যমে নতুন করে একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য দুইটি প্রকেল্প ৩৬টি এবং অন্য আরো দুইটি প্রকল্পে উর্ধ্বমুখি একাডেমিক ভবন ৩টি ও বড় ধরনের মেরামত ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন। ১০টি বড় ধরনের বিদ্যালয় মেরামত কাজ সর্ম্পূণরুপে ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কাজ চলমান রয়েছে নতুন ৬টি এবং উর্ধ্বমুখি ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় একাডেমিক ভবনের।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়গুলোতে নতুনত্বের প্রকাশ পেয়েছে। চকচকে বিদ্যালয়গুলোর সামনে স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করছে। মাঝে মাঝে আবার ভবনের চকচকে দেওয়ালগুলো হাত বুলিয়ে বলছে, ওই শুন দেওয়ালডাত হাত দিলেই আপনে সড়কে পড়ছে’ খুব মজা লাগছে, এছাড়াও তাদের মাঝে আরো কত খোশগল্প নতুন এই ভবন নিয়ে। এমন দৃশ্যটি দেখা মিলে উপজেলার সিংহোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে।

একইভাবে দূর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা নির্মিত ভবনটিকে স্থানীয়রা বড় স্কুলের সাথে তুলনা করে কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, এমন গ্রাম্য স্থানে এমন বিদ্যালয় নির্মিত হওয়াটা আমাদের কাছে খুব আনন্দের। তারা আরো বলেন, বিদ্যালয়টির নতুন ভবন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় আসার ক্ষেত্রে মনোযোগ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে বলে তারা মনে করেন। এছাড়াও তিনতলা ভবনটি অনেক দক্ষতার সাথে নির্মাণ করিয়ে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী বলে মন্তব্য তাদের। 

সিংহোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাহিবুল ইসলামের প্রতিনিধি স্থানীয় ঠিকাদার আবু তাহের জানান, প্রকৌশলীরা খুব দক্ষতার সাথে বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের কাজ করিয়ে নিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজের গুনগত মান নিয়ে যেমন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রকৌশলীদের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তেমনি প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধেও আমার কোন অভিযোগ নেই। আমরা আন্তরিকতার সাথে কাজ শেষ করেছি।

একইভাবে দূর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দেলোয়ার হোসেন দিপু’র প্রতিনিধি স্থানীয় ঠিকাদার আব্দুল করিম মুঠোফোনে জানান, বর্তমান সরকারের আমলে ঠিকাদারী কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়াও দায়িত্বরত প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভবনের নির্মাণ কাজ খুব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার সাথে করিয়ে নিয়েছে। তাদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই আমি বলতে পারি গুনগত ও মান সম্পন্নভাবে ভবন নির্মাণ করেছে আমার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। 

বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মুঠোফোনে কথা হয় দূর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনা আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, একাডেমিক ভবনের কাজ খুব ভাল হয়েছে। প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম দক্ষতার সাথে আমাদের উপস্থিতিতেই ভবনের ভিত্তি স্থাপন থেকে শুরু করে, ছাদের ঢালাইয়ের কাজসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছে। সেই-সুবাধে বলতে পারি ভবনের কাজ অনেক ভাল হয়েছে।

একইভাবে সিংহোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির বলেন, ভবনের নির্মাণ কাজ ভাল হয়েছে। প্রকৌশলী অফিসের লোকেরা খুব দায়িত্ব সহকারে কাজটি করিয়ে নিয়েছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, একাডেমিক ভবনগুলোর কাজ দায়িত্ব সহকারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আদায় করে নেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদারদের এসব কাজে ফাঁকি দেওয়ার বা অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যালয় খোলা হলেই শিক্ষার্থীরা নতুন ভবনে ক্লাশ করতে পারবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আযম মুন্না বলেন, এতগুলো বিদ্যালয়ের এক সাথে নতুন একাডেমিক ভবন বরাদ্দ দিয়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করায় আমি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। 

আরকে//