ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

শেখ হাসিনার গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট

অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস

প্রকাশিত : ০৩:৩৫ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার

বঙ্গবন্ধু কন্যা, লোকায়ত মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত ‘শেখের বেটি’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (১৯৪৭) আমাদের প্রজন্মের কাছে কিংবদন্তির নেত্রী। কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন তিনি; তাঁর রয়েছে একাধিক প্রকাশিত গ্রন্থ। লেখক হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ৩ নভেম্বরে জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত করেছিল। পরিবার-পরিজন হারিয়ে তারপরও শেখ হাসিনা এদেশের সাধারণ মানুষের জন্য ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। শুরু হয় তাঁর নেতৃত্বের যুগ। স্বৈর-শাসক ও জল্লাদের দেশ পুনরায় সোনার বাংলা হয়ে ওঠার প্রত্যাশায় মুখরিত হয়ে ওঠে। ১৯৯৬-এ যেমন, তেমনি ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি জনগণের কল্যাণে সমস্ত মেধা ও শ্রম নিয়োজিত করেছেন। অর্থাৎ শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ ও ভিশন-২০৪১ অর্জনের লক্ষে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ উন্নত ডিজিটাল দেশ গড়ে তোলা। অপরদিকে সময় পেলেই তিনি লিখে চলেন নিজের অভিমতসমূহ। দেশ ও জাতি নিয়ে তাঁর ভাবনার প্রকাশ ঘটে প্রধানত প্রবন্ধে-নিবন্ধে। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ হলো- ‘ওরা টোকাই কেন’, ‘বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম’, People and Democracy, ‘আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি’, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘সহে না মানবতার অবমাননা’, Democracy in Distress Demeaned Humanity, Living in Tears, Democracy Poverty Elimination and Peace, ‘বিপন্ন গণতন্ত্র, লাঞ্ছিত মানবতা’, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণ : কিছু চিন্তাভাবনা’, ‘সাদা কালো’, ‘সবুজ মাঠ পেরিয়ে’, ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ প্রভৃতি।

২.
শেখ হাসিনার একাধিক গ্রন্থে পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কথা উচ্চারিত হয়েছে। কেবল পিতা নন একজন রাজনীতিবিদ ও সফল রাষ্ট্রনায়কের ভিন্ন দিক নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে দেখেছেন নানানভাবে। রাষ্ট্র, ষড়যন্ত্র আর এদেশীয় সমাজ সবই তাঁর নখদর্পণে। দুটি অংশ স্মরণীয়- ক) ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট আমার সকল স্বজন, সকল আপন, সকল বন্ধনই যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। আমি আর আমার ছোট বোন রেহানা তখন জার্মানীতে। সে সময় সেখানে ছিলো আমার স্বামীর কর্মস্থল। সেই প্রবাসে বসেই সংবাদ পেলাম দীর্ঘ তিন দশকের বাঙালি প্রতিবাদের সোচ্চার কণ্ঠস্বর বঙ্গবন্ধু, আমার বাবা শেখ মুজিব নেই। নেই আমার তিন ভাই, নবপরিণীতা দু’টি বধূ, আমার স্নেহময়ী মা, আর পরিবারের অন্য স্বজনরা। নেই কর্নেল জামিল। এ শোকের বর্ণনা দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রিয় পাঠক, আমার এ দৈন্য ক্ষমা করুন।(একানব্বইয়ের ডায়েরী থেকে, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ৮৬-৮৭)

খ) সব হারিয়ে এমন বেঁচে থাকতে তো আমি চাইনি। এই যে প্রতিদিন পলে পলে দগ্ধ হওয়া, এই যে সকল হারানোর প্রচণ্ড দাবদাহ সমস্ত অন্তর জুড়ে, এই যে তুষের আগুনের ধিকিধিকি জ্বলুনির জীবন, এ জীবন তো আমি চাইনি। এর চেয়ে মা, বাবা, ভাইদের সঙ্গে যদি আমিও চলে যেতে পারতাম, তবে প্রতিদিনের এই অসহনীয় যন্ত্রণা থেকে তো বেঁচে যেতাম। আমার জন্য সেটাই ভালো হোত।(বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ৭৩)

বিংশ শতাব্দীর জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে। বাংলাদেশের জাতির জনককে সপরিবারে নিধনযজ্ঞের মধ্যে দিয়ে বর্বরতার চূড়ান্ত সীমা স্পর্শ করেছে সেই ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা পাকিস্তান সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামসের বর্বর আচরণের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ১৫ আগস্টের ঘটনায়। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা সেসময় বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে রক্ষা পায় জাতির পিতার উত্তরাধিকার। জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার অনেকগুলো গ্রন্থের বিভিন্ন প্রবন্ধে ১৫ আগস্ট বারবার মর্মস্পর্শী ঘটনা হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে। তাঁর অনুভূতি কখনো ক্ষোভে আত্মপ্রকাশ করেছে, আবার কখনো বা আবেগসিক্ত হয়ে তিনি নিজেকেও পিতার মতোই দেশ ও জনগণের জন্য অকাতরে নিবেদন করতে চেয়েছেন। ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবসে ঘোষণার কৃতিত্ব তাঁরই।

শেখ হাসিনার বিভিন্ন গ্রন্থে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে যেসব ঘটনা যখন যেভাবে চোখে পড়েছে, অনুভব করেছেন, সেভাবে লেখার চেষ্টা করেছেন। তাঁর ভাষায় : ‘আমি রাজনীতি করি এদেশের মানুষকে ভালোবেসে। দেশের শহর, গ্রাম, যেখানেই আমি সফরে যাই মানুষের দুঃখ-কষ্ট মনকে দারুণভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে। প্রকৃতির কাছে মানুষ যেমন অসহায়, আবার গোষ্ঠীস্বার্থের কাছেও মানুষ কত অসহায় নিগৃহীত, শোষিত। আমার এই রাজনৈতিক জীবনে এসব ঘটনা যখন যেভাবে চোখে পড়েছে, অনুভব করেছি, সেভাবে লেখার চেষ্টা করেছি।’(বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ভূমিকা) ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে সুসজ্জিত হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন। আইন বিভাগের ছাত্র থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবিদাওয়া পূরণের জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন তিনি। তিনি ১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মুখের উপর রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে স্লোগান দিয়ে ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম নেতায় পরিণত হন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক সম্পৃক্ততা স্মরণ করে স্বাধীনতা পরবর্তী তৎকালীন উপাচার্য ও শেখ হাসিনার প্রিয় শিক্ষক ড. আবদুল মতিন চৌধুরীর অনুরোধে ঢাকায় থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেও শেষ পর্যন্ত ৩০ জুলাই তিনি ঢাকা ছাড়েন, ৩১ জুলাই জার্মানীতে স্বামীর কর্মস্থলে পৌঁছান। তাঁর স্মৃতিচারণ : ৩০শে জুলাই আমি ঢাকা ছাড়লাম, আর ৩১শে জুলাই আমি জার্মানী পৌঁছলাম। আমার স্যারের অনুরোধ রাখা হলো না। এর মাত্র পনেরোটা দিনের মধ্যে যে নারকীয় ঘটনা ঘটে গেল, আমি তার জন্য কখনই প্রস্তুত ছিলাম না। এতো বড়ো রোজকিয়ামত আমি কোন দুঃস্বপ্নেও দেখিনি। এ আমি ভাবিনি। ১৫ তারিখে আমার বাবা, মা, তিন ভাই, চাচা, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে আমি হারালাম। ঐ দিনটি আমার জন্য যেমন ছিলো, এমন দিন যেন কারো জীবনে কখনই না আসে। আমার ছোট বোন রেহানা তখন আমার সঙ্গেই জার্মানীতে ছিল।(ড. আবদুল মতিন চৌধুরী: আমার স্মৃতিতে ভাস্বর যে নাম, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ৭২-৭৩)

ছোট বোন শেখ রেহানা সম্পর্কে তাঁর মর্মস্পর্শী বাক্য : ‘কিন্তু আমার সঙ্গে সমব্যথার অংশীদার হয়ে আজও আমার সেই একটি মাত্র ছোট বোন রেহানা বেঁচে আছে, আমারই মতন প্রচণ্ড শোকের দাবদাহকে বুকের গভীরে ছাই চাপা দিয়ে, যা নিরন্তর কেবল আমাদের অন্তরকে করে চলছে ক্ষত-বিক্ষত।’(ড. আবদুল মতিন চৌধুরী: আমার স্মৃতিতে ভাস্বর যে নাম, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩:৭১)

১৯৮১-র ১৭ মে মাসে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। প্রবাসের রাজনৈতিক আশ্রয়ের দিন শেষ হয় তাঁর। দেশে ফেরার প্রতিক্রিয়ায় তাঁর আবেগসিক্ত কথন : আমার দুর্ভাগ্য, সব হারিয়ে আমি বাংলাদেশে ফিরেছিলাম। লক্ষ মানুষের স্নেহ-আশীর্বাদে আমি সিক্ত হই প্রতিনিয়ত। কিন্তু যাঁদের রেখে গিয়েছিলাম দেশ ছাড়ার সময়, আমার সেই অতি পরিচিত মুখগুলি আর দেখতে পাই না। হারানোর এক অসহ্য বেদনার ভার নিয়ে আমাকে দেশে ফিরতে হয়েছিল।…(ড. আবদুল মতিন চৌধুরী: আমার স্মৃতিতে ভাস্বর যে নাম, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩:৭৪)

১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে একাধিক বার বন্দি অবস্থায় নিঃসঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে হয়েছে তাঁকে। তিনি লিখেছেন : ‘দেশ ও জনগণের জন্য কিছু মানুষকে আত্মত্যাগ করতেই হয়, এ শিক্ষাদীক্ষা তো আমার রক্তে প্রবাহিত। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর পর প্রবাসে থাকা অবস্থায় আমার জীবনের অনিশ্চয়তা ভরা সময়গুলোয় আমি তো দেশের কথা ভুলে থাকতে পারিনি? ঘাতকদের ভাষণ, সহযোগীদের কুকীর্তি সবই তো জানা যেত।’ (নূর হোসেন, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯: ৫৩)

৩.
৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘটনাকে শেখ হাসিনা চিহ্নিত করেছেন ‘ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর তুলনা করেছেন বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার নির্মম পরিণতির সঙ্গে। ‘আবারও একবার বাংলার মাটিতে রচিত হল বেঈমানীর ইতিহাস। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ নবাব সিরাজুদ্দৌলার সাথে বেঈমানী করেছিল তাঁরই সেনাপতি। ক্ষমতার লোভে, মীর জাফর নবাব হবার আশায়। ১৯৭৫ সালে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বাংলাদেশে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল তাঁরই মন্ত্রী পরিষদ সদস্য খন্দকার মুস্তাক। রাষ্ট্রপতি হবার খায়েশে। ঘাতকের দলে ছিল কর্ণেল রশিদ, কর্ণেল ফারুক, মেজর ডালিম, হুদা, শাহরিয়ার, মহিউদ্দীন, খায়রুজ্জামান, মোসলেম গং। পলাশীর প্রান্তরে যেমন নীরবে দাঁড়িয়েছিল নবাবের সৈন্যরা সেনাপতির গোপন ইশারায়-

১৯৭৫ এদিনও নীরব ছিল তারা, যারা বঙ্গবন্ধুর একান্ত কাছের, যাদেরকে নিজ হাতে গড়ে তুলেছিলেন, বিশ্বাস করে ক্ষমতা দিয়েছিলেন- যাদের হাতে ক্ষমতা ছিল এতটুকু সক্রিয়তা বা ইচ্ছা অথবা নির্দেশ বাঁচাতে পারত বঙ্গবন্ধুকে- খন্দকার মুস্তাকের গোপন ইশারায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল তারা, এগিয়ে এল না সাহায্য করতে। মীর জাফরের নবাবী কতদিন ছিল? তিন মাসও পুরো করতে পারে নাই- খন্দকার মুশতাকের রাষ্ট্রপতি পদ(যা সংবিধানের সব নীতিমালা লংঘন করে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অর্জিত) তিন মাসও পুরো করতে পারে নাই। আসলে বেঈমানদের কেউই বিশ্বাস করে না।…(ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ৫৬-৫৭)

প্রকৃতপক্ষে ভবিষ্যতে কেউ যেন বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের কথা উচ্চারণ করতে না পারে- এজন্য সপরিবারে এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল।

৪.
১৫ আগস্ট পরবর্তী স্বৈরতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে তিনি একাধিক স্থানে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করেই তাঁর এসব অভিমত- ‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের দল ১৯৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিল জাতির জনককে হত্যা করে। মাত্র ৩ বৎসর ৭ মাস এদেশের মানুষ সত্যিকার গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছিল। তারপর শুরু হল ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।’(নূর হোসেন, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯:৫৭) ৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে। দুষ্কৃতকারীরা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও সংগ্রামের লক্ষ্য করেছে ব্যাহত। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর প্রতি রাতে কার্ফু দেওয়া হতো। শাসকদের হাতে জনগণ ছিল জিম্মি। শাসকরা জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করলে আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার পরিবর্তন ঘটান যায়। শেখ হাসিনা লিখেছেন : ক) ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঠিক ফজরের নামাজের সময় ধানমন্ডির বত্রিশ নং সড়কের বাড়িতে ইতিহাসের কলঙ্কতম অধ্যায় রচিত হয়। ঘাতকের দল বাঙ্গালী জাতির মহানায়ক বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘাতকের হাত থেকে শিশু-নারীরাও রেহাই পায়নি। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয়।(বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ১৯) খ) বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, জনগণের অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা, নেতৃত্বের দূরদর্শিতা ও সময়োচিত পদক্ষেপ সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে যখন দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন এই ষড়যন্ত্রকারীরা চরম আঘাত হানে- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। আর তারপরই জন্ম নেয় আইয়ুব-ইয়াহিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণে দেশ শাসনের স্বৈরতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। যে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্য এদেশের মানুষ স্বাধীনতা এনেছে, ত্রিশ লক্ষ শহীদ হয়েছে, দু’লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম দিয়েছে। সেই স্বাধীনতার মূল্যবোধ নস্যাৎ করে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেওয়া হল। সামরিক শাসন জারি করে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে বাংলার মানুষকে আইয়ুবী কায়দায় শাসন ও শোষণ করা শুরু হল। যেখানে স্বাধীন দেশে নতুন চিন্তা-চেতনায় আমরা প্রগতির পথে যেতে পারতাম, সেখানে সেই পিছনেই যেতে হল।(বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩:১০)

পরবর্তী সময় ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করে দেশকে নতুন চিন্তা-চেতনায় প্রগতির পথে অগ্রসর করে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বর্তমান সরকারের কণ্ঠে একই প্রত্যয় ঘোষিত হয়েছে। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ৩ নভেম্বর জেল হত্যার মধ্য দিয়ে স্বৈরতন্ত্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন শুরু করে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংসের প্রসঙ্গ বারবার তাঁর কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে। একইসঙ্গে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের দৃঢ়তা। বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ টেনে জিয়াউর রহমান ও এরশাদকে তিনি স্বৈর শাসক হিসেবেই উল্লেখ করেছেন- The Role of the International Community in the Promotion of Democracy and the Rule of Law (Democracy Poverty Elimination and Peace) প্রবন্ধে।

৫.
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আপসহীন সংগ্রামী ভূমিকা যেখানে নতুন প্রজন্মের কাছে আদর্শস্থানীয় হওয়ার কথা ছিল তার পরিবর্তে সেখানে হত্যাকারী সামরিক জান্তার অপকর্মের মহিমাকীর্তি প্রশংসিত হয়েছে। এসব পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন শেখ হাসিনা- ক) ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে আমার মা, বাবা, ভাই ও আত্মীয়-পরিজন অনেককে হারাই। দেশ ও জাতি হারায় তাদের বেঁচে থাকার সকল সম্ভাবনা, আশা-আকাঙ্ক্ষার স্বাধীন সত্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকের দল বাংলার প্রাণকেন্দ্র ঢাকা থেকে সরিয়ে সেই মহাপুরুষকে নিভৃতে পল্লির মাটিতেই কবর দিয়েছে। ইতিহাসের পাতা থেকে তাঁকে মুছে ফেলার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছে- কিন্তু পেরেছে কি?(স্মৃতির দখিন দুয়ার, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯:১২) খ) ১৯৭১ ৭ মার্চে বজ্রনিঘাত কণ্ঠের অমর সে বাণী যেন চুম্বকের মত আকর্ষণ করল প্রতিটি বাঙালিকে। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুকে পরাজিত করে বাংলার দামাল ছেলেরা ছিনিয়ে আনল স্বাধীনতার লাল সূর্যকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঐ পরাজিত শত্রুদের দোসর নিজেদের জিঘাংসা চরিতার্থ করলো যেন। পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ করল। মুজিববিহীন বাংলাদেশের আজ কি অবস্থা? বঙ্গবন্ধু মুজিবের সারা জীবনের সাধনা ছিল শোষণহীন সমাজ গঠন। ধনী দরিদ্রের কোন ব্যবধান থাকবে না। প্রতিটি মানুষ জীবনের নূন্যতম প্রয়োজন আহার, কাপড়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজের সুযোগ পাবে। সারাবিশ্বে বাঙালি জাতির স্বাধীন সত্ত্বাকে সম্মানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে তিনি চেয়েছিলেন।… কিন্তু আমরা কি দেখি, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ঘাতকরা ক্ষান্ত হয় নাই- আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পর্যন্ত বিকৃত করে ফেলেছে। বঙ্গবন্ধুর অবদান খাটো করা হচ্ছে। ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ঘৃণ্য চক্রান্ত চলছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মূল্যবোধ, আদর্শ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সম্পূর্ণভাবে বিসর্জন দেওয়া হলো।(ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, ১৯৯৩: ৫৮-৫৯)

৬.
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা সম্পর্কে লেখক শেখ হাসিনা তাঁর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন ‘বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী’প্রবন্ধে। ক) ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এদেশে সূচনা করা হয়েছে হত্যার রাজনীতি। অন্যায়ভাবে অস্ত্র শক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে রাজনীতিতে আগত দুশ্চরিত্র কতিপয় ব্যক্তিকে নিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগির এক অশুভ প্রক্রিয়া চলছে। পর্যায়ক্রমে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের ধারাও এক্ষেত্রে অব্যাহত রয়েছে। ক্ষমতার লড়াইয়ে এক-একটি সামরিক অভ্যুত্থানে যেমনি প্রাণ দিতে হয়েছে বীর সৈনিকদের তেমনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকারের সংগ্রামে গত এক দশকে শহীদ হয়েছে বহু ছাত্র-জননেতৃবৃন্দ।(বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯: ২৪) খ) ১৫ আগস্টের হত্যার দায়িত্বের বোঝা তাদের(সেনাবাহিনীকে) বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। ক্ষমতাসীনচক্র খুনীদের বিদেশী দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার আজও হয়নি বলেই হত্যার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর কাঁধে চেপে আছে। সেনাবাহিনীর শৃংখলার কারণেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বাঞ্ছনীয় ছিল। আসলে ক্ষমতাসীনরা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের কারণেই খুনীদের বিচার করতে চায় না। সেনাবাহিনীর উপর এই দায়িত্ব চাপিয়ে রাখতে চায়।(বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯: ২৬) গ) ১৫ আগস্টের পর যেমনি জনগণ হারিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার, দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে সংকট- ঠিক তেমনি সেনাবাহিনীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে, তাদের করে তোলা হয়েছে বিতর্কিত। এই অবস্থা দেশের জন্য কিছুতেই কল্যাণকর হবে না। ধুরন্ধর ক্ষমতালোভীরা সৈনিক ও জনতার মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে সেনাবাহিনী ও জনগণের উপর কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব চালিয়ে যাচ্ছে গত দশ বছর ধরে।(বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সেনাবাহিনী, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯: ২৬)

উপরের মন্তব্যগুলো যে সময় লেখা সেই সময় আমরা অতিক্রম করে এসেছি, সেই হতাশার কালও। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়ে রায় কার্যকর করা হয়েছে। তবে কয়েকজন হন্তারক এখনো পলাতক।

৭.
নিম্নবর্গের চেতনায় শেখ হাসিনা লক্ষ্য করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণ করে তাঁর অভিজ্ঞতার দিগন্ত প্রসারিত হয়। গোপালগঞ্জের বর্নি এলাকায় বৃদ্ধা রহিমা খাতুন তাঁর দেখা পেয়ে বলেছেন : ‘কই মা কই, ওরে আমারে একটু দেহা।’ তিনি কাছে গেলে মাথা ও মুখে হাত বুলিয়ে আক্ষেপের সুরে বলেছেন : বাবারে মারছে, আহা এমন মানুষটারে মাইরা ফ্যালালো, বিচারও করল না। খুনীগো বিচার করল না, তাই খোদার গজব আইছে। বান ডাকছে। খোদার আরস কাঁইপা গেছে।’. . . ‘এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মানুষ একটা কথা বারবার বলে, ‘এল খোদার গজব। আমাদের রাজাকে মারছে, এমন ভাল মানুষটাকে মারল, আমাদের দরদীকে মারল, তার বিচার করলে না, আল্লাহ গজব দিছে।’(বন্যাদুর্গত মানুষের সঙ্গে, ওরা টোকাই কেন, ১৯৮৯: ৩৯-৪০)

৮.
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড কেবল দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করেনি বরং চক্রান্তকারীরা সক্রিয় থেকে ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনেও প্রভাব ফেলেছে। শেখ হাসিনার ইংরেজি গ্রন্থে এসব প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হয়েছে। যেমন, Crimes Against Humanity, Democracy Poverty Elimination and Peace এবং Insufferable is this defilement of humanity(Living in Tears) স্মরণীয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে স্বাধীনতা বিরোধীদের ভূমিকা ছিল- Unfortunately, a handful of highly ambitious military officers with the help of the anti-liberation forces killed our great leader, father of the nation, Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman on 15 August 1975, along with eighteen members of his family. They tried to put the country backward and resuscitate the discarded old ideals.They retarded the political and economic development of the country and severely handicapped the nation.(Democracy Human Rights and Security Threats, Democracy Poverty Elimination and Peace, 2005: 70)

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নিজের শান্তি প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু নিজে নিরন্তর শান্তির সপক্ষে কাজ করেছেন। পিতাকেই তিনি স্মরণ করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলার সময় তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন যৌক্তিক কারণে। The Concept of the Caretaker Government, People and Democracy রচনায় তার স্বাক্ষ্য রয়েছে। অবৈধ ও অসাংবিধানিক ক্ষমতা চর্চার ধারা সম্পর্কে তাঁর অভিমত হলো, জেনারেল জিয়াউর রহমানের আমল থেকে এই ধারা বেগবান হয়। তাঁর শাসনকাল ছিল হত্যা ঘটনায় ভরপুর। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বৈরশাসকরা সকল উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ করে দেয়। ২১ বছর পর (ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে) রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা করেছেন ২০০১ এর নির্বাচনোত্তর ভয়াবহ পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন- Women Defiled-Violation of Humanity Will resort to Hartal or Not?( Democracy in Distress Demeaned Humanity) রচনায়। ২০০১ এর নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা জানতে পেরেছিলেন জাতির পিতার মতো তাঁকেও মৃত্যুবরণ করতে হতে পারে। বিএনপি —জামাত সেই চেষ্টা করেছিল একাধিকবার। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল সেই প্রচেষ্টার ভয়ঙ্করতম ঘটনা। যদিও তারা সেদিন নেত্রীকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

৯.
বস্তুত শেখ হাসিনা রাজনৈতিক মঞ্চে ব্যক্তিগত আবেগকে উপস্থাপনে সংযত থাকেন কিন্তু তাঁর গ্রন্থসমূহে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে নানা কথার ভেতর ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘটনা ও তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় তিনি আবেগসিক্ত তবে যুক্তিবাদী ও স্পষ্টকথনে প্রজ্ঞাবান। বিশ্বখ্যাত তথা জগদ্বরেণ্য রাজনীতিবিদ হয়েও তিনি বিচিত্র বিষয়ে গ্রন্থ রচনায় সিদ্ধহস্ত – তাঁর রচিত প্রবন্ধগ্রন্থগুলো পাঠ করলেই তা উপলব্ধি করা যায়। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে, শেখ হাসিনাকে বুঝতে হলে, তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রত্যয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য বারবার তাঁর গ্রন্থ পাঠ জরুরি। নতুন প্রজন্মের নেতা-নেত্রীকে তাঁর জীবন ও গ্রন্থের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দীক্ষা নিতে হবে। মূলত গ্রন্থগুলোর বঙ্গবন্ধুকেন্দ্রিক মতামত, বিশ্লেষণ সবই আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অস্তিত্বের জন্য অত্যাবশ্যক।
লেখক : কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এসএ/